ফ্রিল্যান্সিং জগতে নতুন হিসেবে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন কিন্তু বুঝতে পারছেন না কিভাবে শুরু করবেন? তাই আজ আমরা নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার কিছু টিপস শেয়ার করতে যাচ্ছি। তাহলে এক নজরে দেখে নিন নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন৷
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে৷ সেই সাথে প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে নতুনরা নিজেদের জায়গা তৈরি করে নিচ্ছে তাদে দক্ষতা অনুযায়ী৷ তবে নতুন হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রয়োজন সঠিক গাইডলাইন৷
প্রাথমিকভাবে ফ্রিল্যান্সিং কি বা কেনো সেসব বিষয়ে নতুনরা জানলেও কিভাবে আসলে যাত্রা শুরু করবে সে বিষয়ে তারা অস্পষ্ট৷ নতুনদের মাঝে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে বিভিন্ন জিজ্ঞাসার মধ্যে অন্যতম হলো- ‘কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারি?’ মূলত এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণার অভাবে অনেকের দক্ষতাই সফলতার মুখ দেখতে পায়না৷
এই আর্টিকেলে নতুনদের সুবিধার্তে ফ্রিল্যান্সিং এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোটামুটি একটা দিক নির্দেশনা দেওয়ার চেষ্ঠা করেছি৷
ফ্রিল্যান্সিং শুরুর প্রাথমিক দক্ষতা
প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারের জন্য কিছু বেসিক জিনিসে পারদর্শী হওয়া আবশ্যক৷ নিজের পছন্দের সেক্টরে দক্ষতার পাশাপাশি যেসব বিষয়ে পারদর্শীতা না থাকলেই নয় –
১. বেসিক কম্পিউটার জ্ঞান
এই প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে কম্পিউটার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ আর ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কম্পিউটার যেন সফল হওয়ার গেটওয়ে৷ কারণ অনলাইনে ক্লায়েন্টরা যেসব কাজ দিয়ে থাকেন তা সম্পন্ন করার জন্য কম্পিউটারই একমাত্র সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতা সম্পন্ন ডিভাইস৷ মোবাইলে সব সেক্টরের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করা কখনই সম্ভব নয়৷ আর কম্পিউটারের বেসিক কাজ যেমন ওয়ার্ড, এক্সেল, টাইপিং, গুগল ড্রাইভ ইত্যাদি কাজ জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
২. ইন্টারনেট ব্যবহার
যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো অনলাইনে করা হয়ে থাকে সেহেতু ইন্টারনেট ব্রাউজিং জানার কোনো বিকল্প নেই৷ সার্চ ইঞ্জিন, যেকোন কিছু রির্সাস করে সমাধান বের করার দক্ষতা এবং বিভিন্ন সফটওয়্যারের কাজ জানা থাকলে কাজ করার সময় কোনো বাঁধার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা৷
৩. ইংরেজি দক্ষতা
ইংরেজি ভাষা সব কর্মক্ষেত্রেই একটি অত্যাবশকীয় দক্ষতা৷ ফ্রিল্যান্সিং এর বেলায়ও সেটি ব্যতিক্রম নয়৷ ইংরেজির দক্ষতা কাজ পেতে, ক্লায়েন্ট এর সাথে যোগাযোগ করতে ও মার্কেটপ্লেসে নিজের অবস্থান তৈরি করতে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে৷ ফ্রিল্যান্সিং এ বেশিরভাগ ক্লায়েন্টই বিদেশী, তাই ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করার জন্য ইংরেজি লিখা ও বলায় পারদর্শীতা সর্বপ্রথম আবশ্যক৷ তারা স্কাইপ, মেসেন্জার, লিংকইন এর মত প্ল্যাটফর্মে আপনার ইন্টারভিউ ইংরেজিতে নিয়ে থাকে৷ সেক্ষেত্রে কমিউনিকেট করতে না পারলে ফ্রিল্যান্সিং জগতের প্রতিযোগীতায় আপনি একদম পেছনে পড়ে যাবেন৷
চলুন দেখে নেই কত ভাবে কোথায় থেকে আপনি উপার্জন করতে পারবেন।
১. আপনি লোকাল জব করতে পারেন। এখন বিভিন্ন এজেন্সি বেশ ভালো সেলারি দিয়ে ডিজাইনার হায়ার করে। আপনাকে চোখ খোলা রাখতে হবে।
ডিজাইন কমিউনিটিগুলোতে একটিভ থাকতে পারেন। এখান থেকে লোকাল অনেক ক্লাইন্ট পাবেন। আপনাকে লোকাল ক্লাইন্ট অনেক স্মার্টলি হ্যান্ডেল করতে জানতে হবে।
২. আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স প্লাটফর্মে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।
1. Fiverr
2. Upwork
3. Freelancer
4. PPH
5. Envato Studio
৩. ইন্টারন্যাশলান বিভিন্ন কোম্পানিগুলোতে রিমোট জব করার অপশন আছে। এর জন্য ভালো ইংলিশ আর পোর্টফোলিও থাকা জরুরি।
1. Flexjobs
2. Justremote
3. Linkedin Job
4. Remotive
5. We work remotely
৪. আপনার টার্গেটেড নিস অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে একটিভ থাকতে পারেন। বিভিন্ন কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ লোকদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করুন। এইটা অনেক সময় সাপেক্ষ কাজ তবে দীর্ঘ সময়ে অনেক বেশী রিটার্ন পাবেন।
আপনি মাইক্রোস্টক সাইটে আপনার বিভিন্ন ডিজাইন বিক্রয় করতে পারেন। পণ্যের অনুমোদন এখানে অনেক সহজ।
1. Creative Fabrica
2. Shutterstock
3. Adobe stock
4. Istock
5. Envato Elements
5. Freepik
6. Uplabs
৫. আপনার প্রোডাক্ট অনেক , চাচ্ছেন ব্যান্ডেল আকারে সেল করতে ?
1. Creative Market
২. Design bundle
4. Etsy
৬. আপনি কি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি লোগো / ব্র্যান্ড মার্ক তৈরী করতে পারেন। তাহলে আপনি নিচের কোম্পানি গুলোর সাথে কাজ করতে পারেন।
1. Brandcrowd
2. Logoground
3. Logomood
৭. আপনি কি ভালো আইকন বানাতে পারেন ? এই সাইট গুলো আপনার জন্য।
1. Iconfinder
2. Flaticon
3. Thenounproject
৮. ফন্ট বানানো যদি আপনার নেশা হয় তবে নিচের সাইট গুলো থেকে আপনি ভালো ইনকাম জেনারেট করতে পারেন।
1. Myfont
2. Dafont
3. Fontdaily
৯. আপনি যদি প্রিন্ট ও ডিমান্ড নিয়ে কাজ করতে চান তবে নিচের সাইট গুলো আপনার জন্য হতে পারে আদর্শ।
1. Amazon Kdp
2. Redbubble
3. Socity6
4. Teepublic
১০. আপনি যদি ডিজাইন কন্টেস্ট করতে ভালোবাসেন তবে এই কোম্পানি গুলোর সাথে কাজ করতে পারেন।
1. 99designs
2. Freelancer
3. Designcrowd
4. Designhill
১১. এই সময়টা আপনার পোর্ট ফোলিও বিল্ডআপ করার দারুন সুজোগ। আজকেই শুরু করে দিন পোর্টফোলিও সাজানো। গুনগত মানের পোর্টফোলিও তৈরী করতে পারলে দেখবেন ক্লাইন্ট আপনাকে খুঁজে নিবে।
1. Own Site
2. Dribbble
3. Behance
১২. আপনি যদি অভিজ্ঞ আর দক্ষ হয়ে থাকেন তবে মানুষকে শেখানোর মাধ্যমেও ভালো উপার্জন করতে পারেন।
1. Youtube
2. Udemy
3. Way to Technology
3. Skillshare
১৩. সাথে Graphicriver, Ui8 এর মত কত সাইট আছে যেখানে আপনি আপনার প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন।
প্রোডাক্ট সেলিং কিংবা সার্ভিস যেকোন একটা ধরে সামনে যেতে হবে। একসাথে দুইটা করতে গেলে অনেক সমস্যায় পড়বেন। যেকোন একটা ইন্ডাস্ট্রি ধরে সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করুন।
১৪. আপনি যদি সার্ভিসবেজ কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার এই স্কিলগুলি ডেভলপ করা জরুরি :
1. Marketing
2. Communication
3. Pricing
4. Deal closing
5. Relationship
১৫. আপনি যদি প্রোডাক্টৰেজ কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার এই স্কিলগুলি ডেভলপ করা জরুরি :
1. Market Research
2. Trend
3. Basic SEO
4. SMM
5. Innovation
এখন একবার চিন্তা করে দেখেন তো এত অপশন থাকতেও যদি আপনি কাজ না করতে পারেন তবে এর ব্যর্থতা নিতান্তই আপনার।