
বর্তমানে বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্যের জন্য এক নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে ব্রয়লার মুরগি। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু ব্রয়লার মুরগিতে পাওয়া গেছে এমন এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া, যার উৎপত্তি মূলত জাপানে। এই ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে প্রবেশ করলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা থেকে শুরু করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
কী এই ব্যাকটেরিয়া?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ব্যাকটেরিয়াটি Campylobacter jejuni অথবা Salmonella পরিবারের কোনো স্ট্রেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে, যা সাধারণত খাদ্যদূষণের মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। জাপানে এটি ইতিমধ্যেই খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে কীভাবে ছড়ালো?
এটি স্পষ্ট নয় যে ব্যাকটেরিয়াটি বাংলাদেশে কিভাবে প্রবেশ করেছে, তবে ধারণা করা হচ্ছে আমদানিকৃত মুরগির খাদ্য, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন বা সংক্রমিত মুরগির মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের বিভিন্ন খামারে অপরিষ্কার পরিবেশ এবং নিয়মিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে এই ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়ে যাচ্ছে।
কী ঝুঁকি রয়েছে মানুষের জন্য?
এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে দেখা দিতে পারে:
পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি
জ্বর ও দুর্বলতা
দীর্ঘমেয়াদে কিডনি বা অন্ত্রের জটিল সমস্যা
প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ না করা (অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স)
করণীয় কী?
সঠিকভাবে রান্না করুন: ব্রয়লার মুরগি অবশ্যই ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি তাপে রান্না করুন।
কাঁচা ও রান্না করা খাবার আলাদা রাখুন: সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে কাঁচা মুরগি আলাদা জায়গায় রাখুন।
বিশ্বস্ত উৎস থেকে মুরগি কিনুন: স্থানীয় খামার বা নির্ভরযোগ্য দোকান থেকে মুরগি কেনা ভালো।
সচেতন হোন ও প্রচার করুন: এ বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিন, যাতে সবাই নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।
উপসংহার
ব্রয়লার মুরগি বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও, এই নতুন জাপানি ব্যাকটেরিয়া সতর্কবার্তা দিচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের ব্যক্তিগত সচেতনতা, খামার পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারি পর্যায়ে কঠোর নজরদারি এখন সময়ের দাবি।