০৮:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা

 

 

 

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া : সাধারণত প্রস্রাব করার সময় যদি প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বলে বা জ্বালাপোড়া করে থাকে সেটাকে আমরা প্রসাবে জ্বালাপোড়া বুঝি। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হতে পারে। নিচে সেটার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রসাবে ব্যথা : ঘন ঘন প্রস্রাব করার সময় যদি প্রস্রাবের নালীতে অথবা তলপটে অথবা অন্য কোথাও ব্যথা অনুভূত হয় সেটাইহচ্ছে প্রস্রাবে ব্যাথা। মেডিকেলের ভাষায় একে ডিস-ইউরিয়া বলা হয়। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

এই সমস্যা কাদের হতে পারে : পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে পুরুষের তুলনায় মহিলারা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন।

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যাথার কারণ
১. অপর্যাপ্ত পানি পান করা : মানবদেহের চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনন্দিন তিন থেকে চার লিটার পানি পান করতে হয়। যদি এর থেকে পরিমাণে অনেক কম পানি পান করা হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে প্রসাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে।

২. প্রস্রাবের নালিতে ইনফেকশন হলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে। এই ইনফেকশন সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা হয়ে থাকে।

৩.অনিয়ন্ত্রিত ও বিপদজনকভাবে সেক্সচুয়াল ইন্টার কোর্স করলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

৪.এপিডিডিমিটিস (Epididymitis) এ প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন হলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

৫. প্রোস্টেট ইনফ্লামেশন হলে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৬. প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে গেলে ব্যথাও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৭. পেলভিস এর অর্গানে ইনফ্লামেশন হলে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৮. পেলভিক ফ্লোর মাসেল দুর্বল হলে প্রসাবের জ্বালা পোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

৯. কিডনিতে পাথর থাকলে প্রসাব করার সময় ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথার লক্ষণ
১. অস্বস্তি ও জ্বালাপোড়া অনুভূত হওয়া।

২. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।

৩. প্রসাবের বেগ হলেই দ্রুত প্রসাব করতে যাওয়া।

৪. তলপেটে ব্যথা ও চাপ অনুভূত হওয়া।

৫. প্রস্রাব দেখতে ঘোলাটে হওয়া।

৬. প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হওয়া।

৭. প্রস্রাবের সাথে অন্য পদার্থ যাওয়া।

৮. পোলভিসে ব্যথা ও অস্বস্তি।

৯. দুর্বলতা অনুভব হওয়া।

রোগ নির্ণয় : সমস্যার ইতিহাস ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। যেমন :

ইতিহাস।
আলট্রাসনোগ্রাফি।
সিটি স্ক্যান।
এমআরআই ইত্যাদি।
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথায় করণীয় বা চিকিৎসা
সাধারণত রোগের কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রিত ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করতে হয়।

মেডিসিন: এক্ষেত্রে ইউরোলজিস্ট ডাক্তাররা বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক সহ বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে থাকেন।
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা : যদি পেলভিক ফ্লোর মাসেলের দুর্বলতার কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ব্যথা হয় তবে পেলভিক স্টিমুলেশন চেয়ার পোস্ট পারটাম মেশিন ব্যবহার করে সমস্যা দূর করতে পারি। এছাড়াও ওজন থেরাপির মাধ্যমে সমস্যাটি দূর করা সম্ভব।
ঘরোয়া চিকিৎসা: পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা। মহিলাদের মাসিকের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।প্রসাব ও পায়খানা করার সময় অতিরিক্ত প্রেসার না দেওয়া। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগ থেকে বাঁচার জন্য সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা

আপডেট সময়ঃ ১১:০৮:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

 

 

 

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া : সাধারণত প্রস্রাব করার সময় যদি প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বলে বা জ্বালাপোড়া করে থাকে সেটাকে আমরা প্রসাবে জ্বালাপোড়া বুঝি। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হতে পারে। নিচে সেটার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রসাবে ব্যথা : ঘন ঘন প্রস্রাব করার সময় যদি প্রস্রাবের নালীতে অথবা তলপটে অথবা অন্য কোথাও ব্যথা অনুভূত হয় সেটাইহচ্ছে প্রস্রাবে ব্যাথা। মেডিকেলের ভাষায় একে ডিস-ইউরিয়া বলা হয়। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

এই সমস্যা কাদের হতে পারে : পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে পুরুষের তুলনায় মহিলারা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন।

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যাথার কারণ
১. অপর্যাপ্ত পানি পান করা : মানবদেহের চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনন্দিন তিন থেকে চার লিটার পানি পান করতে হয়। যদি এর থেকে পরিমাণে অনেক কম পানি পান করা হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে প্রসাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে।

২. প্রস্রাবের নালিতে ইনফেকশন হলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে। এই ইনফেকশন সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা হয়ে থাকে।

৩.অনিয়ন্ত্রিত ও বিপদজনকভাবে সেক্সচুয়াল ইন্টার কোর্স করলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

৪.এপিডিডিমিটিস (Epididymitis) এ প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন হলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

৫. প্রোস্টেট ইনফ্লামেশন হলে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৬. প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে গেলে ব্যথাও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৭. পেলভিস এর অর্গানে ইনফ্লামেশন হলে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৮. পেলভিক ফ্লোর মাসেল দুর্বল হলে প্রসাবের জ্বালা পোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

৯. কিডনিতে পাথর থাকলে প্রসাব করার সময় ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথার লক্ষণ
১. অস্বস্তি ও জ্বালাপোড়া অনুভূত হওয়া।

২. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।

৩. প্রসাবের বেগ হলেই দ্রুত প্রসাব করতে যাওয়া।

৪. তলপেটে ব্যথা ও চাপ অনুভূত হওয়া।

৫. প্রস্রাব দেখতে ঘোলাটে হওয়া।

৬. প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হওয়া।

৭. প্রস্রাবের সাথে অন্য পদার্থ যাওয়া।

৮. পোলভিসে ব্যথা ও অস্বস্তি।

৯. দুর্বলতা অনুভব হওয়া।

রোগ নির্ণয় : সমস্যার ইতিহাস ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। যেমন :

ইতিহাস।
আলট্রাসনোগ্রাফি।
সিটি স্ক্যান।
এমআরআই ইত্যাদি।
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথায় করণীয় বা চিকিৎসা
সাধারণত রোগের কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রিত ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করতে হয়।

মেডিসিন: এক্ষেত্রে ইউরোলজিস্ট ডাক্তাররা বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক সহ বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে থাকেন।
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা : যদি পেলভিক ফ্লোর মাসেলের দুর্বলতার কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ব্যথা হয় তবে পেলভিক স্টিমুলেশন চেয়ার পোস্ট পারটাম মেশিন ব্যবহার করে সমস্যা দূর করতে পারি। এছাড়াও ওজন থেরাপির মাধ্যমে সমস্যাটি দূর করা সম্ভব।
ঘরোয়া চিকিৎসা: পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা। মহিলাদের মাসিকের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।প্রসাব ও পায়খানা করার সময় অতিরিক্ত প্রেসার না দেওয়া। বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগ থেকে বাঁচার জন্য সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা।