
নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানির নতুন হাব হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সৌদি আরবের তেল জায়ান্ট আরামকো চট্টগ্রামে একটি আধুনিক তেল পরিশোধনাগার (রিফাইনারি) স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশাল এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন আরামকো লাভবান হবে, তেমনি বাংলাদেশ পাবে নতুন কর্মসংস্থান, রাজস্ব ও কৌশলগত সুবিধা।
সাম্প্রতিক একাধিক বৈঠকে সৌদি সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিনিধিদের মধ্যে এই বিনিয়োগ নিয়ে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম ও সৌদি বন্দর জেদ্দা বা দাম্মামের মধ্যে একটি সরাসরি সামুদ্রিক রুট চালু করে অপরিশোধিত তেল আনা হবে, যা এখানে রিফাইন করে রপ্তানি করা হবে ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে।
তবে বিষয়টি একেবারেই নতুন নয়। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে আরামকো বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখালেও সেসময়ের সরকার তা আমলে নেয়নি। সেই সঙ্গে বিনিয়োগে আগ্রহী ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার টেক জায়ান্ট স্যামসাং-ও, যারা শেষ পর্যন্ত ফিরে যায় খালি হাতে।
বর্তমান সরকারের সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতায় ফের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে এসব প্রকল্প। শুধু তেল পরিশোধনই নয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি হবে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের নতুন রুট, বাড়বে পোর্ট-ভিত্তিক ব্যবসা ও লজিস্টিক সুবিধা। এতে করে বাংলাদেশ শুধু মধ্যস্থতাকারী নয়, পরিশোধিত জ্বালানির একটি নির্ভরযোগ্য রপ্তানিকারক দেশ হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পাবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনীতিতে গতি আসবে, কমবে জ্বালানি নির্ভরতা, এবং জনগণও পাবে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী দামে জ্বালানি পণ্য।
বিশ্ব জ্বালানি মানচিত্রে বাংলাদেশকে নতুন করে স্থাপন করতে চলেছে এই উদ্যোগ — একটি “গেম চেঞ্জার মুভ” হিসেবেই দেখছেন অনেকে।