
আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, মানসিক চাপ, প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণে ঘুমের সমস্যা এখন একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাতে ঘুম না হওয়া বা ইনসমনিয়া শুধু শরীরকেই ক্লান্ত করে না, এর প্রভাব পড়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও। ঘুমের এই সমস্যার সমাধানে কিছু সহজ ও কার্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে। চলুন জেনে নিই ইনসমনিয়া দূর করার ৫টি কার্যকর কৌশল:
১. নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে জাগা আপনার দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়িকে (Biological Clock) সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। ছুটির দিনেও এই রুটিন বজায় রাখার চেষ্টা করুন। এতে করে মস্তিষ্ক বুঝে নেয় কখন বিশ্রামের সময় এসেছে।
২. ঘুমের আগে স্ক্রিন টাইম কমান
স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ বা টিভির স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো (Blue Light) মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটায়, যা ঘুমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করুন।
৩. ঘুমের পরিবেশকে আরামদায়ক করে তুলুন
ঘুমানোর ঘরটি ঠান্ডা, অন্ধকার এবং নীরব হওয়া উচিত। প্রয়োজন হলে চোখের মাস্ক, কানে তুলা বা হালকা ঘুমের মিউজিক ব্যবহার করতে পারেন। আরামদায়ক বালিশ ও বিছানা ঘুমের মান উন্নত করে।
৪. ক্যাফেইন ও ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন
ঘুমানোর ৪-৬ ঘণ্টা আগে কফি, চা বা চকোলেট জাতীয় ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। একইভাবে ঘুমানোর আগে ভারী খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে, যা ঘুম ব্যাহত করে।
৫. রিল্যাক্সেশন বা মেডিটেশন অনুশীলন করুন
ঘুমানোর আগে ধ্যান (মেডিটেশন), গভীর শ্বাস নেওয়া, হালকা স্ট্রেচিং বা বই পড়া মানসিক চাপ কমিয়ে ঘুমে সহায়তা করে। নিয়মিত এই অভ্যাসগুলো গড়ে তুললে ঘুম ধরা সহজ হয়।
শেষ কথা:
ইনসমনিয়া কোন রোগ নয়, বরং এটি একটি লক্ষণ। উপরের কৌশলগুলো প্রয়োগ করেও যদি ঘুমের সমস্যা থেকে যায়, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিজের দৈনন্দিন অভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন এনে আপনি পেতে পারেন প্রশান্তির গভীর ঘুম।