০৬:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারী উন্নয়ন কমিশনে কোন ইসলামি আলেম, কোরআনিক ব্যাখ্যাকারীদের রাখা হয়নি কেন?: ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী সম্প্রতি এক আলোচনায় নারী উন্নয়ন কমিশনের ৪৩৩টি সুপারিশ নিয়ে মতামত দেন। তিনি বলেন, “এই কমিশন সাংবিধানিক নয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে গঠিত একটি কমিশন মাত্র। ফলে এর সুপারিশগুলো বাধ্যতামূলক নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর গ্রহণযোগ্যতার ওপরই নির্ভর করবে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে কি না।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কমিশনের গঠনে কেন কোন ইসলামি আলেম, ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ বা কোরআনিক ব্যাখ্যাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি?” তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় ইসলামী শরিয়াহ ও সমাজ বাস্তবতা অনুধাবনে আলেমদের অন্তর্ভুক্তি জরুরি ছিল।
ব্যারিস্টার পাটোয়ারী বলেন, “কমিশনের সুপারিশে ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোডের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত এবং সংবেদনশীল। বাংলাদেশ সিডো (CEDAW) কনভেনশন স্বাক্ষর করলেও কিছু অনুচ্ছেদে রিজার্ভেশন রেখেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো পারিবারিক আইন ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধান।”

তিনি বলেন, “ইসলামে নারীদের উত্তরাধিকারে ৫০% অধিকার নিশ্চিত করা আছে। কিন্তু বাস্তবে আমরা সেটা কতটা নিশ্চিত করতে পেরেছি? অনেক পরিবারে মেয়েরা ভাইদের কাছে সম্পত্তি চায় না, কারণ এতে পারিবারিক সম্পর্ক ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আগে আমাদের সেই ৫০% অধিকার বাস্তবে নিশ্চিত করতে হবে।”

ম্যারিটাল রেপ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ম্যারিটাল রেপ একটি বাস্তব ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আইনজীবী হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি, মানসিক ও শারীরিকভাবে জোরপূর্বক সম্পর্ক স্থাপন ডিভোর্সের কারণ হয়েছে। তবে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, একান্ত ব্যক্তিগত এই বিষয়ে প্রমাণ উপস্থাপন কঠিন।”
শেষে তিনি বলেন, “কমিশনের প্রধান নিজেই বলেছেন, ৪৩৩টি সুপারিশের মধ্যে ২০০টি বাস্তবায়ন করলেও তা নারীর অগ্রগতির জন্য অনেক বড় সাফল্য হবে। তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, ধর্মীয় সংবেদনশীলতা ও সমাজের বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়েই এগোতে হবে। তা না হলে এসব সুপারিশ কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে।”

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

নারী উন্নয়ন কমিশনে কোন ইসলামি আলেম, কোরআনিক ব্যাখ্যাকারীদের রাখা হয়নি কেন?: ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

আপডেট সময়ঃ ০৬:৪০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী সম্প্রতি এক আলোচনায় নারী উন্নয়ন কমিশনের ৪৩৩টি সুপারিশ নিয়ে মতামত দেন। তিনি বলেন, “এই কমিশন সাংবিধানিক নয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে গঠিত একটি কমিশন মাত্র। ফলে এর সুপারিশগুলো বাধ্যতামূলক নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর গ্রহণযোগ্যতার ওপরই নির্ভর করবে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে কি না।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কমিশনের গঠনে কেন কোন ইসলামি আলেম, ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ বা কোরআনিক ব্যাখ্যাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি?” তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় ইসলামী শরিয়াহ ও সমাজ বাস্তবতা অনুধাবনে আলেমদের অন্তর্ভুক্তি জরুরি ছিল।
ব্যারিস্টার পাটোয়ারী বলেন, “কমিশনের সুপারিশে ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোডের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত এবং সংবেদনশীল। বাংলাদেশ সিডো (CEDAW) কনভেনশন স্বাক্ষর করলেও কিছু অনুচ্ছেদে রিজার্ভেশন রেখেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো পারিবারিক আইন ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধান।”

তিনি বলেন, “ইসলামে নারীদের উত্তরাধিকারে ৫০% অধিকার নিশ্চিত করা আছে। কিন্তু বাস্তবে আমরা সেটা কতটা নিশ্চিত করতে পেরেছি? অনেক পরিবারে মেয়েরা ভাইদের কাছে সম্পত্তি চায় না, কারণ এতে পারিবারিক সম্পর্ক ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আগে আমাদের সেই ৫০% অধিকার বাস্তবে নিশ্চিত করতে হবে।”

ম্যারিটাল রেপ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ম্যারিটাল রেপ একটি বাস্তব ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আইনজীবী হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি, মানসিক ও শারীরিকভাবে জোরপূর্বক সম্পর্ক স্থাপন ডিভোর্সের কারণ হয়েছে। তবে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, একান্ত ব্যক্তিগত এই বিষয়ে প্রমাণ উপস্থাপন কঠিন।”
শেষে তিনি বলেন, “কমিশনের প্রধান নিজেই বলেছেন, ৪৩৩টি সুপারিশের মধ্যে ২০০টি বাস্তবায়ন করলেও তা নারীর অগ্রগতির জন্য অনেক বড় সাফল্য হবে। তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, ধর্মীয় সংবেদনশীলতা ও সমাজের বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়েই এগোতে হবে। তা না হলে এসব সুপারিশ কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে।”