
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন মোড় নিয়েছে রোববার (৫ মে) সকালে, যখন ইয়েমেনি প্রতিরোধ বাহিনীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেন গুরিয়নের কাছে আঘাত হানে। হামলায় অন্তত দুই ইসরাইলি সেনা নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ইসরাইলের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরের সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত ঘোষণা করে।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম টাইম অব ইসরাইল ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিমানবন্দরের পাশে একটি বিশাল ধোঁয়ার কুন্ডলী আকাশে উঠছে, যা হামলার স্পষ্ট প্রমাণ। ইরানি বার্তা সংস্থা মেহের জানায়, রোববার সকালে ইসরাইলের মধ্যাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠে। কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, ইয়েমেন থেকে ছোড়া এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বেন গুরিয়নের কাছেই বিস্ফোরিত হয়েছে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করতে একাধিকবার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। আইডিএফ মুখপাত্র বলেন, “আমরা বিস্ফোরণের প্রভাব নিশ্চিত করেছি। দুই সেনা নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তদন্ত চলছে।”
যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি ইয়েমেনি হুথি গোষ্ঠী আনসারুল্লাহর কর্মকাণ্ড। গাজা যুদ্ধ ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে হুথিরা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবার ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রটি হাইপারসনিক ধরনের হওয়ায় ইসরাইলের আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও তা থামাতে পারেনি।
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও নেভিগেশন প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে তা বর্তমান ‘আয়রন ডোম’, ‘ডেভিড’স স্লিং’ বা ‘অ্যারো’ সিস্টেম দিয়ে প্রতিহত করা প্রায় অসম্ভব। বিশ্লেষকদের মতে, যদি সত্যিই ইয়েমেন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে, তবে এটি ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য এক গুরুতর চ্যালেঞ্জ এবং মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ভারসাম্যে নতুন এক যুগের সূচনা হতে পারে।