
অনেকেই মনে করেন, প্রোটিন বেশি খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায়। তবে এই ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয় বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকরা।
পুষ্টিবিদ অমিতা গদরে বলেন, “প্রোটিন আর পিউরিন এক জিনিস নয়। ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার মূল কারণ হলো ‘পিউরিন’ যুক্ত খাবার। প্রোটিন মানেই ইউরিক অ্যাসিড বাড়বে, এটা একদম ভুল ধারণা।”
তিনি আরও জানান, প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, তবে সবকিছুই পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উচিত।
হায়দরাবাদের গ্লেনইগলস হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ফিজিশিয়ান ডা. হরিচরণ জি জানান, “ইউরিক অ্যাসিড শরীরে তৈরি হয় যখন পিউরিন ভেঙে যায়। অনেক প্রোটিনযুক্ত খাবারেও পিউরিন থাকে, তবে সব প্রোটিন সমান ক্ষতিকর নয়।”
তিনি বলেন, লাল মাংস, অর্গান মিটস (যেমন লিভার, কিডনি) এবং কিছু সী-ফুড (যেমন সারডিন, অ্যাঙ্কোভি) পুরিনে ভরপুর এবং এগুলো ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে পারে। তবে বিনস, ডাল, টফু-র মতো উদ্ভিজ্জ প্রোটিন সাধারণত কম পরিমাণে পিউরিন থাকে এবং শরীরে ইউরিক অ্যাসিড খুব একটা বাড়ায় না।
ডায়েটিশিয়ান রিয়া দেশাই জানান, ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে প্রোটিন পুরোপুরি বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং, কোন ধরনের প্রোটিন খাচ্ছেন এবং কতটা খাচ্ছেন, সেটি গুরুত্বপূর্বক দেখা উচিত।
উপযুক্ত খাবার বাছাই করার কিছু পরামর্শ:
* কম পিউরিনযুক্ত প্রোটিন: দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডাল, শাকসবজি।
* পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমতে না দেওয়ার জন্য হাইড্রেট থাকা জরুরি।
* অ্যালকোহল ও মিষ্টি পানীয় এড়িয়ে চলুন: এগুলো ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে পারে।
যেসব খাবারে বেশি পিউরিন থাকে এবং এড়িয়ে চলা উচিত:
* লাল মাংস (গরু, খাসি), অর্গান মিটস (যেমন লিভার, কিডনি),
* কিছু সামুদ্রিক খাবার (যেমন সারডিন, অ্যাঙ্কোভি, মাশেলস, স্ক্যালপস),
* মিষ্টি পানীয় ও সোডা (বিশেষ করে যেগুলোতে ফ্রুক্টোজ থাকে),
* প্রসেসড খাবার অ্যালকোহল (বিশেষ করে বিয়ার ও হুইস্কি)
উপসংহার:
সব ধরনের প্রোটিন ইউরিক অ্যাসিড বাড়ায় না। সঠিকভাবে খাদ্য নির্বাচন ও পরিমিত গ্রহণই স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মূল চাবিকাঠি। তবে যাদের ইউরিক অ্যাসিড বেশি, তাদের জন্য একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেয়া সব সময়ই ভালো।