০৩:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফাইবারযুক্ত খাবার কেন খাবেন, এটি কীভাবে উপকার করে, জানালেন চিকিৎসক

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার থাকে, যা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে ফাইবারযুক্ত খাবার। যা আমাদের হৃদরোগের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
নেচারেল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর এবং নিউট্রিশন কনসালট্যান্ট ড. বিলাস শিরহাট্টি বলেন,উদ্ভিদজাতীয় খাবার গ্রহণ থেকে প্রাপ্ত ফাইবার দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় প্রকারে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। যা ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনায় অবদান রাখে। ফাইবার গ্রহণের অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য, জ্বালাপোড়া অন্ত্র সিন্ড্রোম ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, তা জানিয়েছেন এই চিকিৎসক। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ ব্যাপারে তাহলে জেনে নেয়া যাক।
হজম প্রক্রিয়া ধীর করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: দ্রবণীয় ফাইবার পানিতে দ্রবীভূত হয়ে জেলির মতো ঘনত্ব তৈরি করে। যা আপনার হজমকে ধীর করে দেয়। খাবার গ্রহণের পর রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি রোধ করে। এ জন্য ওটস, আপেল, নাশপাতি ও ডালের মতো খাবার থেকে ফাইবার পাওয়া যায়।

কোলেস্টেরল কমায় এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখে: ফাইবার পাচনতন্ত্রের কোলেস্টেরলের সঙ্গে আবদ্ধ হয়, যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল), ট্রাইগ্লিসারাইড ও খুব কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (ভিএলডিএল) কমাতে সহায়তা করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। যা কিনা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। কালো মটরশুটি, ব্রাসেলস স্প্রাউট ও বাদামের মতো দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করে।

অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং হজমশক্তি উন্নত করে: অদ্রবণীয় ফাইবার মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে থাকে। মসুর ডাল, ছোলা ও গমের রুটির মতো খাবার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট করে, হজম ও বিপাকীয় স্বাস্থ্য উন্নত করে। এই ফাইবার অন্ত্রের সুস্থ ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে খাদ্য এবং তাদের বৃদ্ধি ও শর্ট চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপাদনকে সহায়তা করে।

✪ আরও পড়ুন: ভেন্নার তেল ব্যবহারের আশ্চর্যজনক উপকারিতা

রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়: ফাইবার গ্লুকোজ শোষণকে ধীর করে দেয়। খাবারের পর রক্তে শর্করার আকস্মিক বৃদ্ধি থামায়। নিয়মিত ফাইবার গ্রহণ করলে ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া উন্নত হয় এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।

ডায়াবেটিসের জটিলতার ঝুঁকি কমায়: রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে ফাইবার। একইসঙ্গে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও স্নায়ুর ক্ষতির ঝুঁকি হ্রাস করে। দীর্ঘমেয়াদী ফাইবার গ্রহণ টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং সামগ্রিক বিপাকীয় স্বাস্থ্যের উন্নতি করে থাকে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

ফাইবারযুক্ত খাবার কেন খাবেন, এটি কীভাবে উপকার করে, জানালেন চিকিৎসক

আপডেট সময়ঃ ১০:২৫:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার থাকে, যা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে ফাইবারযুক্ত খাবার। যা আমাদের হৃদরোগের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
নেচারেল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর এবং নিউট্রিশন কনসালট্যান্ট ড. বিলাস শিরহাট্টি বলেন,উদ্ভিদজাতীয় খাবার গ্রহণ থেকে প্রাপ্ত ফাইবার দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় প্রকারে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। যা ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনায় অবদান রাখে। ফাইবার গ্রহণের অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য, জ্বালাপোড়া অন্ত্র সিন্ড্রোম ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, তা জানিয়েছেন এই চিকিৎসক। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ ব্যাপারে তাহলে জেনে নেয়া যাক।
হজম প্রক্রিয়া ধীর করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: দ্রবণীয় ফাইবার পানিতে দ্রবীভূত হয়ে জেলির মতো ঘনত্ব তৈরি করে। যা আপনার হজমকে ধীর করে দেয়। খাবার গ্রহণের পর রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি রোধ করে। এ জন্য ওটস, আপেল, নাশপাতি ও ডালের মতো খাবার থেকে ফাইবার পাওয়া যায়।

কোলেস্টেরল কমায় এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখে: ফাইবার পাচনতন্ত্রের কোলেস্টেরলের সঙ্গে আবদ্ধ হয়, যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল), ট্রাইগ্লিসারাইড ও খুব কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (ভিএলডিএল) কমাতে সহায়তা করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। যা কিনা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। কালো মটরশুটি, ব্রাসেলস স্প্রাউট ও বাদামের মতো দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করে।

অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং হজমশক্তি উন্নত করে: অদ্রবণীয় ফাইবার মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে থাকে। মসুর ডাল, ছোলা ও গমের রুটির মতো খাবার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট করে, হজম ও বিপাকীয় স্বাস্থ্য উন্নত করে। এই ফাইবার অন্ত্রের সুস্থ ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে খাদ্য এবং তাদের বৃদ্ধি ও শর্ট চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপাদনকে সহায়তা করে।

✪ আরও পড়ুন: ভেন্নার তেল ব্যবহারের আশ্চর্যজনক উপকারিতা

রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়: ফাইবার গ্লুকোজ শোষণকে ধীর করে দেয়। খাবারের পর রক্তে শর্করার আকস্মিক বৃদ্ধি থামায়। নিয়মিত ফাইবার গ্রহণ করলে ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া উন্নত হয় এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।

ডায়াবেটিসের জটিলতার ঝুঁকি কমায়: রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে ফাইবার। একইসঙ্গে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও স্নায়ুর ক্ষতির ঝুঁকি হ্রাস করে। দীর্ঘমেয়াদী ফাইবার গ্রহণ টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং সামগ্রিক বিপাকীয় স্বাস্থ্যের উন্নতি করে থাকে।