০৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা আ’লীগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিলো: এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, “বিষয়টি শুধু আমাদের একার না। এটা জনগণেরই বিবেচনার বিষয়। গণঅভ্যুত্থানের আট মাস পরও আমরা এই বিষয়ে কথা বলছি, অথচ এই সময়ের মধ্যে এই ইস্যুটি নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।”
তিনি আরো বলেন, “আইন উপদেষ্টা বলেছেন যে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে যদি রাজনৈতিক দলগুলো মিলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রস্তাব দেয়, তবে তা বিবেচনায় নেয়া হবে। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি বিএনপির শীর্ষ নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং অন্য অনেক রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে মন্তব্য করেছেন। এমনকি এনপির পক্ষ থেকেও আমরা একাধিকবার এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি।”
অনিক রায় আরও অভিযোগ করেন, “জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। এটা শুধুমাত্র এক-দুইজন নেতার কাজ ছিল না। গোটা দল একযোগে নামতে দেখা গেছে। আমার নিজ এলাকা খিলগাঁও গোড়ান বাজারে কাউন্সিলর আনিসুজ্জামান শিক্ষার্থীদের গ্রাফিটি কার্যক্রমে হামলা চালিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আট মাস কেটে গেলেও কেন এখনো আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল হয়নি? আমরা তো চাইনি নির্বাহী আদেশে দলটি নিষিদ্ধ হোক। আমরা বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই নিষিদ্ধ করার পক্ষে, যাতে সিদ্ধান্তটি গ্রহণযোগ্য হয়।”

তিনি বলেন, “আমরা চাই যে যতদিন না বিচার শেষ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত অন্তত দলটির নিবন্ধন বাতিল ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হোক। এটি একটি রাজনৈতিকভাবে সঠিক অবস্থান। কিন্তু আজও দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ মিছিল করছে, সংগঠিত হচ্ছে। অথচ দলটির পক্ষ থেকে এখনো কোনো দুঃখপ্রকাশ কিংবা অপরাধ স্বীকার করা হয়নি। শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যেও সেই পুরনো চিত্রই ফুটে উঠেছে—’আমার কী অপরাধ?’ এই মানসিকতা নিয়ে রিকনসিলিয়েশন কীভাবে সম্ভব?”
তিনি আরো বলেন, “আমরা বারবার বলেছি, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং তাদের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত। আমরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই, জনগণের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”

এছাড়া তিনি আদালতে আবেদন না জানানো প্রসঙ্গে বলেন, “বিষয়টি এককভাবে এনসিপির না। আমরা চাইলে কালই করতে পারি। কিন্তু বিষয়টি হলো, আইন উপদেষ্টা বারবার জাতীয় ঐক্যমতের কথা বলছেন। অথচ বিএনপি, আমাদের দল এবং আরও অনেক দলের শীর্ষ নেতারা ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তাহলে এই ঐক্যমতের জন্য এখনো অপেক্ষা কিসের?”

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা আ’লীগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিলো: এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক

আপডেট সময়ঃ ০১:০৯:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, “বিষয়টি শুধু আমাদের একার না। এটা জনগণেরই বিবেচনার বিষয়। গণঅভ্যুত্থানের আট মাস পরও আমরা এই বিষয়ে কথা বলছি, অথচ এই সময়ের মধ্যে এই ইস্যুটি নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।”
তিনি আরো বলেন, “আইন উপদেষ্টা বলেছেন যে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে যদি রাজনৈতিক দলগুলো মিলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রস্তাব দেয়, তবে তা বিবেচনায় নেয়া হবে। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি বিএনপির শীর্ষ নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং অন্য অনেক রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে মন্তব্য করেছেন। এমনকি এনপির পক্ষ থেকেও আমরা একাধিকবার এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি।”
অনিক রায় আরও অভিযোগ করেন, “জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল। এটা শুধুমাত্র এক-দুইজন নেতার কাজ ছিল না। গোটা দল একযোগে নামতে দেখা গেছে। আমার নিজ এলাকা খিলগাঁও গোড়ান বাজারে কাউন্সিলর আনিসুজ্জামান শিক্ষার্থীদের গ্রাফিটি কার্যক্রমে হামলা চালিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আট মাস কেটে গেলেও কেন এখনো আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল হয়নি? আমরা তো চাইনি নির্বাহী আদেশে দলটি নিষিদ্ধ হোক। আমরা বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই নিষিদ্ধ করার পক্ষে, যাতে সিদ্ধান্তটি গ্রহণযোগ্য হয়।”

তিনি বলেন, “আমরা চাই যে যতদিন না বিচার শেষ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত অন্তত দলটির নিবন্ধন বাতিল ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হোক। এটি একটি রাজনৈতিকভাবে সঠিক অবস্থান। কিন্তু আজও দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ মিছিল করছে, সংগঠিত হচ্ছে। অথচ দলটির পক্ষ থেকে এখনো কোনো দুঃখপ্রকাশ কিংবা অপরাধ স্বীকার করা হয়নি। শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যেও সেই পুরনো চিত্রই ফুটে উঠেছে—’আমার কী অপরাধ?’ এই মানসিকতা নিয়ে রিকনসিলিয়েশন কীভাবে সম্ভব?”
তিনি আরো বলেন, “আমরা বারবার বলেছি, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং তাদের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত। আমরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই, জনগণের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”

এছাড়া তিনি আদালতে আবেদন না জানানো প্রসঙ্গে বলেন, “বিষয়টি এককভাবে এনসিপির না। আমরা চাইলে কালই করতে পারি। কিন্তু বিষয়টি হলো, আইন উপদেষ্টা বারবার জাতীয় ঐক্যমতের কথা বলছেন। অথচ বিএনপি, আমাদের দল এবং আরও অনেক দলের শীর্ষ নেতারা ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তাহলে এই ঐক্যমতের জন্য এখনো অপেক্ষা কিসের?”