০৩:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন ছাদবিহীন বাস চালিয়ে ছয় কিলোমিটার যাত্রা, কারণ জানা গেল

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী একটি বাসের ছাদ উড়ে যাওয়ার পরও সেটিকে ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নেওয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি বরগুনার পাথরঘাটাগামী ছিল এবং এটি রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় যাত্রা শুরু করে।

প্রাথমিক তথ্যমতে, বাসটি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে উঠলে একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে বাসটির ছাদ সামনের অংশ থেকে ভেঙে পেছনে আটকে যায়। এর কিছুক্ষণ পর, সমষপুর এলাকায় পৌঁছালে ছাদটি সম্পূর্ণভাবে উড়ে যায়। এ সময় একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয় বাসটি। ছাদবিহীন অবস্থায়ও বাসটি প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে কুমারভোগ এলাকায় চালিয়ে নিয়ে যান চালক শহিদুল ইসলাম।

বাসটি থামানোর পরিবর্তে চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের মতে, চালকের এমন আচরণ ছিল বেপরোয়া ও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বাস মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক জগলুল ফারুক দাবি করেছেন, চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন কারণ বাসটির ব্রেকের পাইপ ফেটে যায়। এজন্য গতি নিয়ন্ত্রণ করতে চালক বাসটি সামনে চালিয়ে নিয়ে যান।

অন্যদিকে, কয়েকজন অভিজ্ঞ চালক জানিয়েছেন, ব্রেক ফেল করলে এমন দূরত্ব চালানো সম্ভব নয়। বরং চালক সেনাবাহিনীর গাড়ি ও হাইওয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পালাতে চেষ্টা করেন।

চালক শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তিনি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি আগে কখনো হননি এবং আতঙ্কে কী করছেন, বুঝে উঠতে পারেননি। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তিনি রং সাইড দিয়ে আসা একটি প্রাইভেট কারকে দায়ী করেন, যেটিকে সাইড দিতে গিয়ে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

ঘটনার সময় বাসে প্রায় ৬০ জন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে “বাঁচাও বাঁচাও” বলে চিৎকার করতে থাকলেও চালক বাস থামাননি। অবশেষে স্থানীয়দের বাধায় বাস থামে এবং হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

এ ঘটনায় বাসচালক, সহকারী ও মালিকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসাড়া হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক আতাউর রহমান।

 

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

কেন ছাদবিহীন বাস চালিয়ে ছয় কিলোমিটার যাত্রা, কারণ জানা গেল

আপডেট সময়ঃ ১২:২১:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী একটি বাসের ছাদ উড়ে যাওয়ার পরও সেটিকে ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নেওয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি বরগুনার পাথরঘাটাগামী ছিল এবং এটি রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় যাত্রা শুরু করে।

প্রাথমিক তথ্যমতে, বাসটি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে উঠলে একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে বাসটির ছাদ সামনের অংশ থেকে ভেঙে পেছনে আটকে যায়। এর কিছুক্ষণ পর, সমষপুর এলাকায় পৌঁছালে ছাদটি সম্পূর্ণভাবে উড়ে যায়। এ সময় একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয় বাসটি। ছাদবিহীন অবস্থায়ও বাসটি প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে কুমারভোগ এলাকায় চালিয়ে নিয়ে যান চালক শহিদুল ইসলাম।

বাসটি থামানোর পরিবর্তে চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের মতে, চালকের এমন আচরণ ছিল বেপরোয়া ও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বাস মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক জগলুল ফারুক দাবি করেছেন, চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন কারণ বাসটির ব্রেকের পাইপ ফেটে যায়। এজন্য গতি নিয়ন্ত্রণ করতে চালক বাসটি সামনে চালিয়ে নিয়ে যান।

অন্যদিকে, কয়েকজন অভিজ্ঞ চালক জানিয়েছেন, ব্রেক ফেল করলে এমন দূরত্ব চালানো সম্ভব নয়। বরং চালক সেনাবাহিনীর গাড়ি ও হাইওয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পালাতে চেষ্টা করেন।

চালক শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তিনি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি আগে কখনো হননি এবং আতঙ্কে কী করছেন, বুঝে উঠতে পারেননি। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তিনি রং সাইড দিয়ে আসা একটি প্রাইভেট কারকে দায়ী করেন, যেটিকে সাইড দিতে গিয়ে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

ঘটনার সময় বাসে প্রায় ৬০ জন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে “বাঁচাও বাঁচাও” বলে চিৎকার করতে থাকলেও চালক বাস থামাননি। অবশেষে স্থানীয়দের বাধায় বাস থামে এবং হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

এ ঘটনায় বাসচালক, সহকারী ও মালিকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসাড়া হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক আতাউর রহমান।