
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন বিতর্কিত নীতি এবং ইউক্রেন ও গাজা ইস্যুতে তার অবস্থানের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (১৯ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসিসহ নিউইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো, বোস্টনের মতো বড় শহরগুলোতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। ‘ইমপিচ অ্যান্ড রিমুভ’ (অভিশংসন ও অপসারণ) স্লোগানে মুখরিত ছিল দেশটির রাজপথ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ান ও লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
জানা গেছে, দেশজুড়ে প্রায় ৪০০টি বিক্ষোভ আয়োজনের পেছনে রয়েছে ‘৫০৫০১’ নামের একটি অ্যাক্টিভিস্ট সংগঠন, যার নামের অর্থ – ৫০টি রাজ্যে ৫০টি প্রতিবাদ মিলে একটি আন্দোলন। আয়োজকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের মাধ্যমে নাগরিক অধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘনের প্রতিবাদেই এই বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে বিতাড়িত অভিবাসীদের পক্ষে স্লোগান দেন এবং বরখাস্ত হওয়া ফেডারেল কর্মচারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। অনেক বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনের পক্ষে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দেন এবং প্রতীকী কেফিয়েহ স্কার্ফ পরিধান করেন। তারা ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে কঠোর মার্কিন অবস্থানেরও আহ্বান জানান।
হোয়াইট হাউসের সামনে অনেকের হাতে ‘শ্রমিকদের হাতে ক্ষমতা চাই’, ‘রাজতন্ত্র নয়’, ‘ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করো’ প্রভৃতি স্লোগান লেখা পোস্টার দেখা যায়।
ম্যাসাচুসেটসের কনকর্ডে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জর্জ ব্রায়ান্ট উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার আশঙ্কা ট্রাম্প আমেরিকাকে একটি পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত করছেন।’ তার হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘ট্রাম্পের ফ্যাসিস্ট শাসন এখনই দূর হয়’। ৭৬ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী বব ফ্যাসিক বলেন, ‘আজ যদি আমরা কিছু না করি, তাহলে আমাদের সন্তান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এমন এক পৃথিবী রেখে যাব যা বসবাসের যোগ্য থাকবে না।’
ওয়াশিংটন মনুমেন্টের কাছে বিক্ষোভকারীদের এক ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ঘৃণার মাধ্যমে কোনো জাতিকে মহান করা যায় না।’
শনিবারের এই বিক্ষোভে ম্যানহাটন থেকে সান ফ্রান্সিসকো পর্যন্ত বিভিন্ন শহরের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ ট্রাম্প প্রশাসনের নানা নীতির বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চতুর্থবারের মতো দেশজুড়ে বড় ধরনের গণবিক্ষোভ।