জাতীয়

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘মোখা’, কীভাবে হল এই নাম?

বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচিত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। আবহাওয়াবিদরা এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন হালনাগাদ তথ্য দিচ্ছেন গণমাধ্যমে। এরই মধ্যে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।

Play Video

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

Play Video

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৯৫ কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড়টি। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

Play Video

 

Play Video

আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

Play Video

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

Play Video

জেনে নিন ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র নামকরণের ইতিহাস

ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের তথ্য অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে ইয়েমেন। সেই দেশের বিখ্যাত শহর মোখার নাম থেকেই রাখা হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম।

ইয়েমেনের শহর মোখা সারা বিশ্বের কাছে পরিচিতি কফির জন্য। কফির উৎপাদন এবং সারাবিশ্বে সরবরাহের কাজ করা হয় এই শহর থেকে। এটির নামেই নামকরণ হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের। বর্তমানে ‘মোখা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ-অতি উন্নতমানের কফি। যে কোনো ধরনের কফি, দুধ চিনি ও কোকোর স্বাদযুক্ত পানীয়। সাধারণত ভেড়ার চামড়া দিয়ে তৈরি দস্তানা বিশেষ এবং গাঢ় বাদামি রঙের জলপাই অর্থ প্রকাশেও ‘মোখা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

ভাষাবিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ আমীন বলেন, ‘মোখা’ ইয়েমেনের লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত একটি বন্দর। এর ইংরেজি বানান ‘Mocha/Makka’। উচ্চারণ /Mokha (মোখা)/। আরবি االمخا /al-Mukhā/ হতে শব্দটির উদ্ভব। ঊনবিংশ শতক পর্যন্ত ‘মোখা’ ছিল ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর। ‘মোখা’ অঞ্চলে ‘মোখা’ নামে পরিচিত বিশ্বখ্যাত কফির চাষ হয়। এই কফির নামকরণও করা হয়েছে ‘মোখা’ শহরের নামে। অটোমান যুগে ‘মোখা’ বন্দর বিশ্ব কফি-বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ছিল।

‘মোখা’ শব্দটির উৎস ‘আদি সেমিটিক’ (Mocha: מוקה। তখন এর অর্থ ছিল-জলাঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার শঙ্কা এবং উর্বর পলিতে সমৃদ্ধ হওয়ার মতো সম্ভাবনায় অঞ্চল; গাঢ় জলপাই রং, প্রবল মেঘে ঢাকা আকাশের রং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button