

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এদেশে গণহত্যা চালিয়ে অনেক মায়ের বুক খালি করেছে, বিধবা করেছে অনেক বোনকে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার কবর রচিত হয়েছে।’
শনিবার সন্ধ্যায় নীলফামারীর জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ২৪ এর গণঅভুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের ফিরে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি আবার ফিরে আসে তাহলে ভংঙ্কর পরিস্থিতি হবে।
কাজেই আওয়ামী লীগের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে এই দেশের রাজনীতিতে আর মাথাচারা দিতে দেওয়া যাবে না।’
আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পচাত্তরে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর ছিয়ানব্বইয়ে ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ। ভারতের সহযোগিতায় ২০০৮ সালে আরেকটি নীলনকশা নিয়ে ক্ষমতায় এসে দেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে, মানুষের ভোটাধিকারকে হরণ করে দেশকে ভারতের করকরাজ্যে পরিণত করেছিল।
যার ফলে কাটাতারে ফেলানীরা ঝুলেছিল, সীমান্তে প্রতিনিয়ত লাশ পড়েছিল, আমরা নিজ দেশে পরাধীন হয়েছিলাম।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে যদি স্থানীয় নির্বাচন হয় সেটা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। রাজনৈতিক দল যেই সরকারই ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করেছে তাদের প্রার্থীদের কারণে অন্য প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণায় ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। যেহেতু জাতীয় নির্বাচন আমরা এই সরকারের হাতে দিয়েছি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করলে সমস্যা নেই।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব আপনাদের। জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন আপনারা। কাজেই দলাদলি করবেন না। যদি মিলেমিশে থাকতে পারি তবেই আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব। গণ অধিকার পরিষদ সব সময় দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছে, আগামিতেও করবে।
ভারত প্রসঙ্গে নুরুল হক নুর বলেন, ‘হাসিনার পতনের পরে প্রতিবেশি ভারত আমাদের প্রতি বন্ধুসুলভ আচরণ করছে না। তারা অসহিষ্ণু আচরণ করছে। সীমান্তে উস্কানি দিচ্ছে। কাটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। কোথাও কোথাও শূন্য রেখার মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে, উস্কানি দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতকে আমরা হুশিয়ারি দিতে চাই। আপনাদের সেভেন সিস্টার্স কিন্তু স্থির থাকবে না। বন্ধুসুলভ আচরণ করবেন, আমরা বন্ধু সুলভ আচরণ দেখাবো।’
গণ অধিকার পারিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. সোহাগ হোসাইনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন দলের সিনিয় সহসভাপতি ও মুখপাত্র মো. ফারুক হাসান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজিব, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ মোন্নাফ, সহ দপ্তর সম্পাদক ও রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক ইব্রাহিম খোকন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি মো. বিন ইয়ামিন মোল্লা, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল হক, ছাত্র অধিকার পরিষদদের সহসভাপতি মামনুর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শিশির, গণ অধিকার পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, জলঢাকা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. তাইজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মতিন স্বাধীন প্রমুখ।