ফরিদপুর শহরের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী এলাকার বাসিন্দা জিয়া মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদেরকে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক মো. শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এ হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাকান্ডের প্রায় নয় বছর পর এ হত্যা মামলার রায় দেওয়া হলো।
দন্ডপ্রাপ্ত ব্যাক্তিরা হলেন, ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী গ্রামের বাসিন্দা মো. বাবলু সরদার (৪৬), শাহিন সরদার (৪০) ও জুবায়ের মোল্লা (৩০)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পুলিশ প্রহরায় তাদের জেল হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় গোবিন্দপুর গ্রামের বাজার থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন জিয়া মোল্লা (৩৫), তার চাচাতো ভাই জিয়া মাতুব্বর (৪৩) ও বন্ধু ইমন প্রামানিক (৪৪)। তারা পশ্চিম গঙ্গাবর্ধী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে কয়েকজন ব্যক্তি তাদের উপর লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে মারাত্মক আহত হন জিয়া মোল্লা ও তার চাচাতো ভাই জিয়া মাতুব্বর। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে রাত সাড়ে নয়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়া মোল্লা মারা যান। পরদিন ১ অক্টোবর মৃতের বাবা মো. শাহিদ মোল্লা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ছয়-সাত জনকে আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরিদপুরের পরিদর্শক মো. এমারত হোসেন ও মো. শাহজাহান মিয়া তদন্ত করেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক শেখ শাহ আলম তদন্ত করে নয় জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার বাকি ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ৯ বছর পর জিয়া হত্যা মামলার রায়ে তিন জন আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসেবে।