
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের যাঁরা প্রতিনিধি হবেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁদের কাছে ক্ষমতা যাবে, এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এটা তো এক কথায় অবাস্তব এবং অসম্ভব যে ছয় মাসের মধ্যে নতুন একটি ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করা, বিচারব্যবস্থা সংস্কার করা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের মূল ভূমিকায় ফিরিয়ে আনা।’
আজ শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কম্বল বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম আরো বলেন, ‘আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেমনটি বলেছিল, ছাব্বিশের মাঝামাঝির পূর্বে, সেটা হোক কিংবা তার দু-এক মাস আগে হোক।
এ ছাড়া পঁচিশের ডিসেম্বর কিংবা ছাব্বিশের জানুয়ারির কথাও এসেছে। যেটি যৌক্তিক তাতে আমরা কোনো দ্বিমত করব না। কিন্তু যদি বলা হয়, এই বছরের জুন, সেটি অযৌক্তিক। একটা স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রয়োজন।
সংস্কার হওয়ার পরপরই যদি আমরা নির্বাচনের দিকে যাই, তাহলে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে বলে আমরা মনে করি।’
জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা যেখানেই আমরা-আমাদের প্রতিনিধিরা গিয়েছি, সেখানেই যে কথাটি বলেছি, সেটা হচ্ছে এই যে জুলাইয়ের এত বড় একটা অভ্যুত্থান, এটার একটা লিখিত স্বীকৃতি থাকা উচিত। আমাদের যারা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, তাদের একটা স্বীকৃতি থাকা উচিত। সেই উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা গতকাল সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ডেকেছিলেন।
তাঁদের সমন্বয়ে আমরা মনে করি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ফলে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি যাঁরা ছিলেন, এ বিষয়ে সম্মত হয়েছেন যে অবশ্যই একটি ঘোষণাপত্র থাকা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের মানুষের সামনে আসবে। যেখানে বিগত ১৬ বছরে মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের যে প্রেক্ষাপটটি তৈরি হয়েছিল, এই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়, এই অভ্যুত্থানে যা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে যেভাবে এই অভ্যুত্থান সফল হয়েছে এবং আমরা যারা এই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্টবিরোধী সবাই অংশগ্রহণ করেছিলাম, আমরা অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে যে স্বপ্ন দেখি, তার সামগ্রিক একটি রূপরেখা এই জায়গায় দেখতে পাব।’
এর আগে পঞ্চগড় পৌরসভার প্রায় দুই হাজার মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে পঞ্চগড় জেলা ও পৌর বিএনপি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।