

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পূর্বপাড়া এলাকায় ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক শাহজাহান মাস্টারের বিরুদ্ধে ৪ বছরের শিশু মিফতাহুল মাওয়াকে নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশে পুকুরে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়ভাবে অভিযোগ পাওয়া গেছে, শাহজাহান বাড়ির নির্মাণের জন্য বালু রাখে। চার বছরের শিশু মিফতাহুল মাওয়া বালুর স্তুপ থেকে দু’মুঠো বালু পুকুরে ফেলে। এতে শাহজাহান ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটিকে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। এসময় শিশুটির বড় বোন গালিবা সুলতানা (১০) অভিযুক্ত শাহজাহানের পায়ে ধরে বোনকে পুকুর থেকে উঠানোর জন্য আকুতি মিনতি করে। কিন্তু তাতেও শাহজাহানের মন গলেনি।
এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিশুর পরিবার থেকে জানা যায়, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে কুমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তার মা শামসুন নাহার তানিয়া জানান, ঘটনার আকস্মিকতায় সে ভয়ে ও আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এতে নির্যাতিত শিশুর মা মোসা. (৩৫), বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় বুড়িচং পূর্ব পাড়া মৃত মঞ্জুর আলী সর্দারের ছেলে মো. শাহ জাহানের (৫০) বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি এবং ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি। আসামিকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র জানান, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শিশুর মানসিক বিকাশে অন্তরায়। এ ধরনের ঘটনা বা শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আরও সচেতনতার প্রয়োজন।
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, অভিযুক্ত শাহ জাহানের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য শাহ জাহানকে দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য বুড়িচং থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত শাহজাহান এলাকায় না থাকার দরুন এবং তার মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।