
ফরিদপুরের সালথায় শতাধিক বাগানে শোভা পাচ্ছে নানা রঙের বরই। বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, কাশ্মীরি, নারকেলি, আপেলসহ নানা বাহারি নামের বরই চাষ করেছেন এখানকার কৃষকরা। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ বাগানের বরই খাওয়ার উপযোগী হয়েছে। বাজারে বরইয়ের দামও বেশ ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চারদিকে শুধু বরই আর বরই। পাঁচ থেকে ছয় ফিট উচ্চতার একেকটি গাছে ঝুলছে আকর্ষণীয় নানা রঙের হাজারো বরই। কোনোটির রং একেবারে সবুজ, কোনোটি লালচে-সবুজ কোনোটি আবার হলদে-সবুজ। ছোট থেকে বড় প্রতিটি গাছে বরইয়ের ভারে ডাল নুইয়ে পড়েছে।কৃষকরা সকাল থেকে বাগানগুলো পরিচর্যা ও দেখাশোনা করছেন।
অন্যদিকে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন ফলের দোকানে ঠাঁই পেয়েছে নানা রঙের সুস্বাদু মিষ্টি এসব বরই। অন্য ফলের পাশাপাশি বরইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। বড় আকারের কিছু বরই এসেছে বাজারে, যা দেখতে খুবই আকর্ষণীয়, একেবারে আপেলের মতো।
তবে দাম সব ধরনের জাতের প্রায় একই। প্রতি কেজি বরই বর্তমানে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।
ভরা মৌসুমে বরইয়ের দাম চড়া হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্রেতারা। সালথা বাজারে বরই কিনতে আসা হাফেজ মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, মৌসুমি ফল হওয়ার পরও বরইয়ের দাম বেশি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি কেজি বরই ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা নিচ্ছেন।
এই বরই ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলে ভালো হতো। গরিব মানুষ খেতে পারত। তবে দোকানিদের দাবি, তারা বেশি দামে বাগান থেকে বরই কিনে স্বল্প লাভে বিক্রি করছেন।
সালথার বরইচাষি মো. এনামুল হোসেন ও কাসেম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, বরই বাগান করতে অনেক পরিশ্রম করা লাগে। রাতভর বাগান পাহারা দিতে হয়। খরচ হয় অনেক। এবার আমরা বল সুন্দরী ও ভারত সুন্দরী জাতের বরইয়ের চারা রোপণ করেছিলাম। রোপণের ৮ মাসের মাথায় সব গাছে বরই ধরেছে। ফলনও হয়েছে ভালো। প্রতিটি গাছে ৩০ থেকে ৪০ কেজি বরই পাচ্ছি। প্রতি কেজি বরই ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছি। বাজারে বরইয়ের দাম ভালো হওয়ায় আমরা খুশি।
সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, লাভ বেশি হওয়ায় সালথায় বরইয়ের আবাদ বেড়েছে। এবারও ৩০ একর জমিতে শতাধিক বরইয়ের বাগান করেছেন অন্তত ৫০ জন কৃষক। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বরইচাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।