সারাদেশ

‘জামাই’ আপ্যায়নে বক-বুনোহাঁস, ২ ভ্লগারকে খুঁজছে বন বিভাগ

বক ও বুনোহাঁস ধরে জবাই করে রোস্ট করে ‘জামাইদের’ আপ্যায়ন করার পরিকল্পনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আল-আমিন ও তুলি নামে দুই ভ্লগারকে খুঁজছে রাজশাহী বন বিভাগ। এর আগে, সম্প্রতি আল-আমিন ও তুলি নামে দুইজন ভ্লগার এসব পাখির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে। আল-আমিনের ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে তিনি বাসার স্পেশাল গেস্টকে (জামাই) তার হাতে থাকা পাঁচটি পরিযায়ী বক পাখি রোস্ট করে খাওয়ানোর কথা বলছেন। আবার, তুলির ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, তার বাবা রাতে বিল থেকে বুনোহাঁস পাখিটি ধরে নিয়ে এসেছেন।

Play Video

এই ভিডিওতে প্রকাশ্যে পরিযায়ী পাখি ধরা ও জবাই করে রোস্ট করে খাওয়া উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খন্দকার আজিম আহমেদ ও জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারকে স্মারকলিপি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)। ইয়্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপিতে আল-আমিন ও তুলির শাস্তি দাবি করা হয়। এরপর থেকেই তাদের খোঁজে নেমেছে বন বিভাগ।

Play Video

ইয়্যাসের ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়, আল-আমিন ও তুলি প্রকাশ্যে পরিযায়ী পাখি ধরার ও জবাই করে রোস্ট করে খাওয়ার প্রচারনা দিচ্ছেন, যা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে দুই ভ্লগার আল-আমিন ও তুলির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা, পাখি বা পরিযায়ী পাখি শিকারিদের আইনের আওতায় আনা ও নগরজুড়ে পাখির বিচরণ কেন্দ্র ও আবাসস্থলকে সংরক্ষিত ঘোষণা করে সেখানে আলোদূষণ ও শব্দদূষণ রোধ করারও দাবি জানানো হয়েছে।

Play Video

স্মারকলিপির অনুলিপি বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককেও দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আল-আমিন ও তুলি নামে ওই দুই ভ্লগারের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Play Video

রাজশাহী বন বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি উল্লিখিত কোনো পাখি বা পরিযায়ী পাখির ট্রফি বা অসম্পূর্ণ ট্রফি, মাংস দেহের অংশ সংগ্রহ করলে, দখলে রাখলে বা ক্রয় বা বিক্রি করলে বা পরিবহন করলে, তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে এবং এ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তবে আমরা দুটি ভিডিও পেয়েছি। শুধু ভিডিও আছে তাদের নাম বা ঠিকানা নেই। আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। ওই ভ্লগারদের সন্ধানে নেমেছি। তাদের সন্ধান পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *