বিশ্ব

৪ দিন পর মেয়ের বিয়ে, পুলিশের সামনেই গুলি করে খুন বাবার

মাত্র চার দিন পর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তনু গুর্জরের। কিন্তু অন্য কাউকে বিয়ে করার ইচ্ছার জন্যই তাকে গুলি করে হত্যা করলেন বাবা। এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ভারতের মধ্য প্রদেশের গোয়ালিয়রে।

Play Video

গোয়ালিয়রের গোলা কা মন্দির এলাকায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত প্রায় ৯টায় এই ঘটনা ঘটে।
এক ব্যক্তি পুলিশ সদস্যদের সামনেই নিজের ২০ বছর বয়সী মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেন। নিহত তনু গুর্জর তার পরিবারের নির্ধারিত বিয়ের বিরোধিতা করে নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, তনুর বাবা মহেশ গুর্জর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়ের পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখে ক্রুদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে গুলি করেন। তনুর চাচাতো ভাই রাহুলও এতে সহায়তা করেন, অতিরিক্ত গুলি চালিয়ে নিশ্চিত করেন যে তনু আর বেঁচে নেই।
হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে তনু একটি ভিডিও রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন, যেখানে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তার পরিবার তাকে জোরপূর্বক বিয়ে করতে বাধ্য করছে। ৫২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তিনি তার বাবা মহেশসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের দোষী সাব্যস্ত করেন এবং নিজের জীবনের জন্য শঙ্কা প্রকাশ করেন।
তনু ভিডিওতে বলেন, ‘আমি ভিকিকে বিয়ে করতে চাই। আমার পরিবার প্রথমে রাজি হলেও পরে অস্বীকার করে।
তারা প্রতিদিন আমাকে মারধর করছে এবং মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। যদি আমার কিছু হয়, তবে এর জন্য আমার পরিবার দায়ী।’
তনুর উল্লেখ করা ব্যক্তি ভিকি মাওয়াই উত্তর প্রদেশের আগ্রার বাসিন্দা এবং ছয় বছর ধরে তনুর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ সুপার ধীরেন্দ্র সিংয়ের নেতৃত্বে একটি দল তনুর বাড়িতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করে। এ সময় একটি স্থানীয় পঞ্চায়েতও চলছিল, যেখানে সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।
পুলিশি হস্তক্ষেপের সময় তনু বাড়িতে থাকার বিরোধিতা করেন এবং নিরাপত্তার জন্য সরকারি সহায়তাকেন্দ্রে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু তার বাবা জোর দিয়ে বলেন, তিনি একান্তে কথা বলে মেয়েকে বুঝিয়ে রাজি করাতে পারবেন।
এরপর যা ঘটে তা ছিল ভয়াবহ। মহেশ দেশি অস্ত্র নিয়ে মেয়ের বুকে গুলি করেন। একই সময়ে রাহুল গুলি চালিয়ে তনুর কপাল, গলা এবং চোখ ও নাকের মাঝখানে আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই তনু লুটিয়ে পড়েন ও মারা যান।

Play Video

হত্যার পর মহেশ ও রাহুল পুলিশ ও পরিবারের অন্য সদস্যদের অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখান। মহেশকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলেও রাহুল পিস্তলসহ পালিয়ে যান।

Play Video

তনুর বিয়ে ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, মহেশ গুর্জরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। রাহুলকে ধরার জন্য তল্লাশি চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তনুর অ্যাকাউন্টও তদন্ত করা হচ্ছে।

Play Video

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *