আন্তর্জাতিক

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট গ্রেফতার

দক্ষিণ কোরীয় তদন্তকারীরা প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োলকে গ্রেফতার করেছেন। তিনি গত ডিসেম্বরে সামরিক আইন জারির পর থেকে নানা বিতর্কের মধ্যে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Play Video

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা হয়। এর আগে তাকে গ্রেফতারে গতকালও প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল, তবে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাহিনীর বাধায় সেই অভিযান ব্যর্থ হয়। এরপর, দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তদন্তকারীরা সিউলের কেন্দ্রস্থলে ইউনের বাসভবনে অভিযান চালানোর চেষ্টা করেছিলেন, তবে নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে তারা প্রথমে সফল হতে পারেননি। তবে এরপর পুলিশ সদস্যরা মই বেয়ে তার বাড়ির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন।

Play Video

এদিকে, সংবাদ মাধ্যম ইয়োনহাপ জানিয়েছে, গ্রেফতারের সময় তার সমর্থকরা প্রতিবাদ জানাতে উপস্থিত ছিলেন। হাজারো সমর্থক মাইনাস ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে তার বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানায়। এছাড়া, ইউনের আইনজীবী এবং ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

Play Video

ইউন সুক-ইয়োলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহিতার সঙ্গে যুক্ত। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংসদে তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া চলমান ছিল। চলতি মাসের শুরুতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল এবং তার নিরাপত্তা বাহিনীও তার গ্রেফতারি রোধে সক্রিয় ছিল।

Play Video

এদিকে, তার বিরুদ্ধে যে সামরিক আইন জারি করা হয়েছিল, তা মাত্র ছয় ঘণ্টা পর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিলেন ইউন সুক-ইয়োল, যার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োল একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ হিসেবে ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করেছিলেন। কিন্তু ব্যাপক প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে তিনি তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে।

১৪ ডিসেম্বর, ইউনকে পার্লামেন্টে অভিশংসিত করা হয় এবং প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপর, তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয় এবং তিনি তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপস্থিত হতে অস্বীকৃতি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

এ ঘটনার পর, তদন্তকারীরা ইউন সুক-ইয়োলকে গ্রেফতার করার জন্য তার বাসভবনে অভিযান শুরু করেন। তার নিরাপত্তা বাহিনী এই প্রচেষ্টাকে বারবার ব্যর্থ করে দেয়, তবে গত ১৫ জানুয়ারি তদন্তকারীরা শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করেন।

এ ঘটনাটি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে একটি বড় রাজনৈতিক সংকটের সূচনা করেছে, যেখানে সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সূত্র: আল-জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *