০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় বিএসএমএমইউর চিকিৎসক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা

জুলাই বিপ্লবের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ক্যাম্পাসে ছাত্র জনতার ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শিক্ষক, চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা কর্মচারীসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) শাহবাগ থানায় দায়ের করা এজহারে স্বাক্ষর করেন বিএসএমএমইউ প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ।
মামলার এজহারে বলা হয়, গত ২০২৪ এর ৪ আগাস্ট আনুমানিক সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে শাহবাগ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করছিলেন। সেই সময়ে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের ভেতরে ও ১নং গেটের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত স্বাচিপসহ তৎকালীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা জয় বাংলা স্লোগানসহ বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগানসহ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা পালটা শ্লোগান দিলে প্রশাসনিক ভবনের ভেতর থেকে এবং ছাদের উপর থেকে প্রায় ২৫-৩০ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারী মিলে বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল ও ভারী বস্তু নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে অনেক আন্দোলনকারী মারাত্মক জখম হয়। যা ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে দেখা যায়। বিবাদীরা ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে আক্রমম করে প্রাণনাশের চেষ্টা করেন। সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রাখা হাসপাতালের গাড়ী ও সাধারন মানুষের গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় অনেকেই স্থানীয় আওয়ামীলী গ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হিসেবে চিহ্নিত।

ঘটনার দিন আরও দেখা যায় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০/৩৫টি গাড়ি, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলা হয়। এছাড়াও কেবিন ব্লকের সামনেসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ধধ্বংস করা হয় যা এখনও ক্যাম্পাসের ভিতরে পোড়া বাস দেখলেই বুঝা যায় ওই দিন কি বিভৎস্য অবস্থা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই দিনের ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর স্বারক নং-বিএসএমএমইউ/২০২৪/৮১৭৫, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে ওই দিনের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও স্বাক্ষীদের সহায়তায় তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে জমা প্রদান করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির তদন্তের রিপোর্ট এবং এই ঘটনার সাথে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাত নামা যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে মারামারি করে বিশ্ববিদ্যালয়/সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধন, লুটতরাজ, প্রাণনাশের প্রচেষ্টায় হামলা, ছাত্রদের মারাত্মকভারে জখমসহ জ্বালাও-পোড়াও এর সাথে জড়িত এবং কেবিন ব্লকের সামনে ৩নং গেটে একটি ছাত্রকে হত্যা চেষ্টায় যার অড়িত তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামির অন্তর্ভুক্ত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য এজাহার দায়ের করছি।
জুলাই’২০২৪ বিপ্লবের পরবর্তী বর্তমান প্রশাসন দায়িত্বভার গ্রহন করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ৩ এজাহার দায়ের করতে দেরি হয়েছে বলেও এজহারে উল্লেখ করা হয়।

ট্যাগ

ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় বিএসএমএমইউর চিকিৎসক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময়ঃ ১১:৪১:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

জুলাই বিপ্লবের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ক্যাম্পাসে ছাত্র জনতার ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শিক্ষক, চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা কর্মচারীসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) শাহবাগ থানায় দায়ের করা এজহারে স্বাক্ষর করেন বিএসএমএমইউ প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ।
মামলার এজহারে বলা হয়, গত ২০২৪ এর ৪ আগাস্ট আনুমানিক সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে শাহবাগ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করছিলেন। সেই সময়ে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের ভেতরে ও ১নং গেটের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত স্বাচিপসহ তৎকালীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা জয় বাংলা স্লোগানসহ বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগানসহ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা পালটা শ্লোগান দিলে প্রশাসনিক ভবনের ভেতর থেকে এবং ছাদের উপর থেকে প্রায় ২৫-৩০ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারী মিলে বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল ও ভারী বস্তু নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে অনেক আন্দোলনকারী মারাত্মক জখম হয়। যা ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে দেখা যায়। বিবাদীরা ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে আক্রমম করে প্রাণনাশের চেষ্টা করেন। সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রাখা হাসপাতালের গাড়ী ও সাধারন মানুষের গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় অনেকেই স্থানীয় আওয়ামীলী গ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হিসেবে চিহ্নিত।

ঘটনার দিন আরও দেখা যায় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০/৩৫টি গাড়ি, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলা হয়। এছাড়াও কেবিন ব্লকের সামনেসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ধধ্বংস করা হয় যা এখনও ক্যাম্পাসের ভিতরে পোড়া বাস দেখলেই বুঝা যায় ওই দিন কি বিভৎস্য অবস্থা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই দিনের ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর স্বারক নং-বিএসএমএমইউ/২০২৪/৮১৭৫, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে ওই দিনের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও স্বাক্ষীদের সহায়তায় তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে জমা প্রদান করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির তদন্তের রিপোর্ট এবং এই ঘটনার সাথে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাত নামা যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে মারামারি করে বিশ্ববিদ্যালয়/সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধন, লুটতরাজ, প্রাণনাশের প্রচেষ্টায় হামলা, ছাত্রদের মারাত্মকভারে জখমসহ জ্বালাও-পোড়াও এর সাথে জড়িত এবং কেবিন ব্লকের সামনে ৩নং গেটে একটি ছাত্রকে হত্যা চেষ্টায় যার অড়িত তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামির অন্তর্ভুক্ত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য এজাহার দায়ের করছি।
জুলাই’২০২৪ বিপ্লবের পরবর্তী বর্তমান প্রশাসন দায়িত্বভার গ্রহন করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ৩ এজাহার দায়ের করতে দেরি হয়েছে বলেও এজহারে উল্লেখ করা হয়।