রাজনীতি

ক্ষমতায় গেলে ‘পতিত ফ্যাসিস্টদের’ বিচার করবে বিএনপি : মির্জা ফখরুল

বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে ‘পতিত ফ্যাসিস্টদের’ বিচার করবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

Play Video

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, যে ফ্যাসিজম হয়েছে, এটার বড় শিকার বিএনপি… আমাদের ওপরে যে নিপীড়ন-নির্যাতন-গুম হয়েছে এটা আর কার ওপরে হয়েছে? এমকি অন্য দলগুলোর মধ্যে… আমরা এবং জামায়াতে ইসলাম সবচেয়ে বেশি অ্যাফেক্টেড হয়েছি… আমাদের ওপরে অত্যাচারটা তো সবচেয়ে বেশি হয়েছে।

Play Video

তিনি বলেন, আমরা ফ্যাসিস্টদের বিচার করব না তো কে বিচার করবে… আমরা যদি ক্ষমতায় আসি। আর যেটা (বিচার) শুরু হয়েছে এখান থেকে সরে যাওয়ার কারো কোনো উপায় নেই। অবশ্যই বিচার হবে। আবার বিচার তড়িঘড়িও করা যাবে না। তড়িঘড়ি করলে কিন্তু এই বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। বিচার একটা প্রক্রিয়া এটা চলবে… অবশ্যই আমরা সে বিচার শেষ করব- এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই।

Play Video

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, দেখুন প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের একটা স্বকীয়তা আছে, তাদের চিন্তাভাবনা আছে। আমরা মনে করি, এ কারণে নির্বাচন দ্রুত করা সম্ভব, অসম্ভব কিছু না। জামায়াতে ইসলামী তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে বলেছে, আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে বলেছি।

Play Video

তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন যারা করেছেন তাদের সবার সঙ্গে আমরা ইতোমধ্যে কথা বলেছি… তারা প্রত্যেকে বলেছেন, নির্বাচন দ্রুত হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কারো দ্বিমত নেই। সমমনা দল, বাম দল, ডান দল, যতগুলো আছে সবাই ইতিমধ্যে… আপনারা দেখেছেন যে, সিপিবি দ্রুত নির্বাচনের ব্যাপারে স্ট্যাটমেন্ট দিয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী যে নির্বাচনের ব্যাপারে পার্থক্য খুব বেশি আছে দেখি না। গত কয়েক দিন আগেও উনি (আমির শফিকুর রহমান) বলেছেন, নির্বাচন করা দরকার, আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা দরকার। তাই পার্থক্য কোনো কিছু দেখছি না।

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সাহেবের কাছ থেকে ঘোষণার খসড়াপত্র পেয়েছি এবং উনি অনুরোধ করেছেন যে, এই বিষয়ে আমাদের মতামত জানানোর জন্য। বিষয়টা এত বেশি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ যে, এটা একদিনের নোটিশে করা সম্ভব না। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছি, আমরা আরও আলোচনা করছি… আমাদের অন্য দলগুলো আছে তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। শুধু তাই নয়, সংবিধান বিশেষজ্ঞ যারা আছেন তাদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। কারণ এই ঘোষণাপত্রের মধ্যে সংবিধানের ব্যাপারেও বহু কথা আছে… যেটি আমাদের দেখতে হয়। সুতরাং আমাদের ওই সময়টুকু লাগবে আর কি, আমরা চেষ্টা করছি, আলোচনা করছি।

তিনি বলেন, বিএনপি একটা দায়িত্বশীল দলের জন্ম। সেই জন্মই কিন্তু সংস্কারের মধ্য দিয়ে। অর্থাৎ আমাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সাহেব তিনি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন যা সবচেয়ে বড় সংস্কার… এটা একটা মৌলিক সংস্কার ওয়ান পার্টি সিস্টেম টু মাল্টি পার্টি সিস্টেম, এটা ক্লোজড পলিটিক্যাল সিচুয়েশন থেকে ওপেন পলিটিক্যাল সিচুয়েশন, আবার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও একটা ক্লোজড ইকোনমি থেকে ওপেন ফ্রি ইকোনমিতে নিয়ে আসা… এই কেয়ারটেকার গভর্মেন্ট এখন সবাই মানতেছে… তাই না… এই যে সংস্কার কমিশন করেছে তারাও এই কেয়ারটেকার সরকারের কথাই বলবেন।

তিনি আরও বলেন, সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে বদলাতে পারে, চেঞ্জ হতে পারে… চেঞ্জ ছাড়া তো এগুবে না, সভ্যতা এগুবে না, রাজনীতি এগুবে না, কোনো কিছুই এগুবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *