০৭:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, প্রাণহানি বেড়ে ১০

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। ঘরবাড়ি-অবকাঠামো পুড়ে এরই মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। দাবানলে প্রাণহানি বেড়েছে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা বলেছেন, অনেকগুলি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো নিরাপদ ছিল না। মৃতদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
গত মঙ্গলবার থেকে আগুনের ‍সূত্রপাত হয় লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে। বিনোদন জগতের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শহরটির চারপাশে একাধিক দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আগুনে জ্বালানি গ্যাসের প্রবাহ বন্ধ করতে শ্রমিকদেরকে রাস্তা ধ্বংস করতে দেখা গেছে।

আগুনে এখন পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রায় ১০ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দাদের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং অবসরপ্রাপ্ত অগ্নিনির্বাপক কর্মীদেরও ডাকা হয়েছে।
এদিকে লস এঞ্জেলেস পুলিশ বলছে, তারা শহরের উডল্যান্ড হিলস এলাকায় আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করার অভিযোগে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, দাবানলের আগুন লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেলটুরা কাউন্টির সীমান্তবর্তী কেনেথ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে আগুন প্রায় এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনীকে সহায়তায় কয়েকশ কারাবন্দিকে নামানো হয়েছে।

এদিকে দাবানলে লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় লুটপাট শুরু হয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
মেয়র কারেন বেস লুটপাটকারীদের জন্য জিরো টলারেন্স নীতির বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন, লুটপাটকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে বিনোদনজগতের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। ঘরবাড়ি-অবকাঠামো পুড়ে এরই মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত সাতজন।

লস অ্যাঞ্জেলেস যখন আগুনে পুড়ছে ঠিক তেমনি আগুনে পুড়ছে সাড়ে পাঁচ হাজার মাইল দূরের আরেকটি শহর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। তবে সেটি পুড়ছে ইসরায়েলের টনকে টন বোমা হামলায়। এই বোমার সিংহভাগই সরবরাহ করে আমেরিকা। আর তাই এ নিয়ে আমেরিকান নাগরিকসহ অনেকের মধ্যে রব উঠেছে, ‘গাজার আগুন দাবানল হয়ে ফিরে এসেছে লস অ্যাঞ্জেলেসে’। স্যোশাল মিডিয়ায় এ নিয়ে পোস্ট করেছেন অনেকেই।
মিডল ইস্ট আই, টাইমস অব ইসরায়েল এবং লন্ডনভিত্তিক দ্য নিউঅ্যারাব ডটকম এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্যোশাল মিডিয়াগুলোতে অনেকে ভয়াবহ দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেসের ধ্বংস এবং বাস্তুচ্যুতির অভিজ্ঞতাকে গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের অবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে তুলে ধরেছেন। একইসঙ্গে অনেকে এও বলছেন যে, গাজার সেই আগুন আমেরিকায় আমাদের বাড়িঘরে ফিরে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আমেরিকানরা সোশ্যাল মিডিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেসের ১৮ মিলিয়ন ডলার বাজেট কমিয়ে দেওয়া এবং ইসরায়েলের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেছেন।

ট্যাগ

দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, প্রাণহানি বেড়ে ১০

আপডেট সময়ঃ ০৩:২৭:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। ঘরবাড়ি-অবকাঠামো পুড়ে এরই মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। দাবানলে প্রাণহানি বেড়েছে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা বলেছেন, অনেকগুলি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো নিরাপদ ছিল না। মৃতদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
গত মঙ্গলবার থেকে আগুনের ‍সূত্রপাত হয় লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে। বিনোদন জগতের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শহরটির চারপাশে একাধিক দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আগুনে জ্বালানি গ্যাসের প্রবাহ বন্ধ করতে শ্রমিকদেরকে রাস্তা ধ্বংস করতে দেখা গেছে।

আগুনে এখন পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রায় ১০ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দাদের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং অবসরপ্রাপ্ত অগ্নিনির্বাপক কর্মীদেরও ডাকা হয়েছে।
এদিকে লস এঞ্জেলেস পুলিশ বলছে, তারা শহরের উডল্যান্ড হিলস এলাকায় আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করার অভিযোগে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, দাবানলের আগুন লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেলটুরা কাউন্টির সীমান্তবর্তী কেনেথ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে আগুন প্রায় এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনীকে সহায়তায় কয়েকশ কারাবন্দিকে নামানো হয়েছে।

এদিকে দাবানলে লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় লুটপাট শুরু হয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
মেয়র কারেন বেস লুটপাটকারীদের জন্য জিরো টলারেন্স নীতির বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন, লুটপাটকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে বিনোদনজগতের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। ঘরবাড়ি-অবকাঠামো পুড়ে এরই মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত সাতজন।

লস অ্যাঞ্জেলেস যখন আগুনে পুড়ছে ঠিক তেমনি আগুনে পুড়ছে সাড়ে পাঁচ হাজার মাইল দূরের আরেকটি শহর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। তবে সেটি পুড়ছে ইসরায়েলের টনকে টন বোমা হামলায়। এই বোমার সিংহভাগই সরবরাহ করে আমেরিকা। আর তাই এ নিয়ে আমেরিকান নাগরিকসহ অনেকের মধ্যে রব উঠেছে, ‘গাজার আগুন দাবানল হয়ে ফিরে এসেছে লস অ্যাঞ্জেলেসে’। স্যোশাল মিডিয়ায় এ নিয়ে পোস্ট করেছেন অনেকেই।
মিডল ইস্ট আই, টাইমস অব ইসরায়েল এবং লন্ডনভিত্তিক দ্য নিউঅ্যারাব ডটকম এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্যোশাল মিডিয়াগুলোতে অনেকে ভয়াবহ দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেসের ধ্বংস এবং বাস্তুচ্যুতির অভিজ্ঞতাকে গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের অবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে তুলে ধরেছেন। একইসঙ্গে অনেকে এও বলছেন যে, গাজার সেই আগুন আমেরিকায় আমাদের বাড়িঘরে ফিরে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আমেরিকানরা সোশ্যাল মিডিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেসের ১৮ মিলিয়ন ডলার বাজেট কমিয়ে দেওয়া এবং ইসরায়েলের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেছেন।