জাতীয়

বগুড়ায় ডাকঘরে ডাকাতি ও হত্যা, মূল আসামি গ্রেফতার

বগুড়ার প্রধান ডাকঘরে ডাকাতি ও অফিস সহায়ক প্রশান্ত কুমার আচার্য্যকে হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি মো. শফিকুল ইসলামকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Play Video

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ডাকঘরের ভল্টের সামনে পড়ে থাকা প্যাকেটের কোডের সূত্র ধরে টাকা লুট ও হত্যার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শফিকুল ইসলাম নওগাঁর সাপাহারের পশ্চিম করমডাঙ্গা এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। তাকে সাপাহার উপজেলার বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গত বুধবার অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর শফিকুলের দেয়া তথ্যমতে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ক্রয়কৃত মালামাল এবং বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।

Play Video

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শফিকুল ইসলাম জানায় সে দীর্ঘদিন যাবৎ দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, চুরি ছিনতাই করে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত অনুমান ১২মার্চ সে শার্ট বানানোর জন্য নওগাঁ থেকে তার ব্যবহৃত লাল রংয়ের ফেজার মোটরসাইকেলে চড়ে বগুড়ায় আসে। প্রধান ডাকঘরের সামনে মোটর সাইকেল পার্কিং করে রাখার সময় সে দেখতে পায় লোকজন পোস্ট অফিস থেকে টাকা তুলে বের হচ্ছে। তখন তার মাথায় পোস্ট অফিসের ভল্ট কেটে টাকা লুণ্ঠন করার পরিকল্পনা আসে। এরপর গত ২১ এপ্রিল রাত ২টায় বগুড়ার প্রধান ডাকঘরের উত্তর পূর্ব কোণার চায়ের দোকানের পাশ দিয়ে ওয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। জানালার গ্রিল ভেঙে ভোল্ট রুমে প্রবেশ করে। ভল্ট রুমে প্রবেশ করে সিসি টিভি ক্যামেরার লাইন কেটে দেয় এবং ভল্ট কাটলেও টাকার বাক্স দূরে থাকায় টাকা নিতে পারে না। পরে সবকিছু ওইখানে রেখে সন্ধ্যায় বাইরে বের হয়ে তার নওগাঁর ভাড়া বাসায় চলে যায়। একদিন নওগাঁয় অবস্থান করে রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। পরের দিন ঈদের নামাজ পড়ে বাড়িতেই অবস্থান করে। ঈদের পরের দিন বিকালে সে মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে নওগাঁর ভাড়া বাসায় আসে। সেখানে মোটরসাইকেল গ্যারেজে রেখে বাস যোগে রাত সাড়ে ৯টায় আবারো বগুড়ায় আসে।

Play Video

একই রাতে চায়ের দোকানের পাশ দিয়ে ওয়াল টপকে ডাকঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। এসসয় ভিতরে ঘরের তালা কাটার শব্দে অফিস সহায়ক জেগে যায় এবং তার সাথে তার ধস্তাধস্তি হয়। পরবর্তীতে তার কাছে থাকা এসএস পাইপ দিয়ে অফিস সহায়কের মাথায় আঘাত করে ও গলা চেপে ধরে হত্যা করে। এরপর সে পুনঃরায় ভল্ট রুমে গিয়ে ওই রড দিয়ে র‌্যাকটি কাছে নিয়ে এসে তাতে রক্ষিত ১০০ টাকার ৭০ টি বান্ডিল ও ৫০ টাকার ২০ টি বান্ডিলসহ মোট ৮ লাখ টাকা লুট করে নেয়।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল রাতে বগুড়া শহরের সামমাথা এলাকায় অবস্থিত প্রধান ডাকঘরের ভল্ট কেটে ডাকাতি ও ডাকঘরে পাহাড়ারত শাজাহানপুরের বেজোড়া হিন্দুপাড়ার প্রাণকৃষ্ণ আচার্য্যর ছেলে ও বগুড়া প্রধান ডাকঘরের অফিস সহায়ক প্রশান্ত কুমার আচার্য্য (৪৩) কে হত্যা করে।

Play Video

প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোঃ শরাফত ইসলাম, বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ মোঃ সাইহান ওলিউল্লাহ, সদর থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী, বগুড়া শহর ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহীনুজ্জামান।

Play Video

Play Video

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button