সরকারি কর্মকর্তারা সেবক, কারো গোলাম নয়: ড. আইয়ুব মিয়া
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেছেন, ‘আমরা কেউ কারো গোলাম নই। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের ভাই, বন্ধু ও সহায়ক। যারা সরকারি কর্মকর্তা, তারা হচ্ছেন সেবক, গোলাম নয়। এই কথাটি সবার মাথায় রাখতে হবে।’
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইয়ুব মিয়া বলেন, ‘সবাই এখানে একমত হয়েছেন যে প্রশাসনকে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত হতে হবে। তবে আমরা বলবো না যে রাজনীতি মুক্ত হবে, বরং রাজনীতির চাপ বা প্রভাবমুক্ত হয়ে আইনের বাইরে কিছু করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। জনপ্রশাসন হতে হবে নিরপেক্ষ এবং সেখানে শুধু জনগণের সেবা হবে। কোন সাহেব বা নেতার দিকে তাকানোর প্রয়োজন নেই, সেটা নেতার পক্ষেও হতে পারে, বিপক্ষেও হতে পারে। রাষ্ট্রের মেশিনারি হিসেবে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা আশা করবো, চাঁদপুর থেকেই এই বিপ্লব শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের সভায় একজন বক্তা বলেছেন যে, নিজেদের আগে সংস্কার করতে হবে। কথাটি ভালো লেগেছে। আজকের সভা থেকে আমরা একমত যে, যার যার অবস্থান থেকে নিজেকে সংস্কার করতে হবে এবং সেটাকে রোল মডেল হিসেবে চাঁদপুরকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আপনারা নিজেদের মধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু করুন। সবকিছু আইন বা কাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আপনার আচরণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনপ্রশাসনের দুয়ার তৃণমূল বা প্রান্তিক জনগণের জন্য খোলা থাকতে হবে, যাতে তারা তাদের অভিযোগ জানাতে পারে।’
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান ভূঞা ও মেহেদী হাসান। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন—পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, সিভিল সার্জন ডা. নুর আলম দীন, সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম মাহবুবুর রহমান এবং জেলা তথ্য কর্মকর্তা তপন বেপারী।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন—জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্ল্যাহ সেলিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাড. শাহাজাহান মিয়া, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জেলা সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, হেফাজতে ইসলাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহবুবুর রহমান, জেলা গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহবায়ক মো. জাকির হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন।
সাংবাদিকদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন—রহিম বাদশা, আব্দুল আউয়াল রুবেল, তালহা যোবায়ের এবং কে এম সালাউদ্দিন।
সুশীল সমাজ ও অন্যান্যদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন—আইন কর্মকর্তা অ্যাড. কোহিনুর বেগম, সরকারি মহিলা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর ইকবাল রহমান, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লে. মো. সোয়েব, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. কাজী হাশেম, উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মনিরা আক্তার।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব রাখেন- শিক্ষার্থী সাগর হোসেন, মো. রবিউল আলম, রাহাত।