উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। সেখানকার মেতিস গোষ্ঠীকে স্কেজিউলড ট্রাইবে (তফসিলি উপজাতি) অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সহিংসতা দেখা দিয়েছে। সহিংসতা রুখতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যে সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি আসাম রাইফেলসকে মোতায়েন করা হয়েছে।
গত মাসে ভারতের মণিপুর রাজ্যে মেতিস গোষ্ঠীর মানুষকে ‘স্কেজিউলড ট্রাইবে’ অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। তবে আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে প্রদেশের নাগাসম, জোমিস এবং কুর্কি উপজাতিরা।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বুধবার অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর (এটিএসইউএম) ‘উপজাতি সংহতি’ মিছিল করার ঘোষণা দেয়। মেতিস গোষ্ঠীর মানুষ মিছিলে বাধা দিলে এটি সহিংস রূপ ধারণ করে। যা রাজধানী ইম্ফাল, চুরান্দপুর এবং কাংপোকপিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে রাজ্যের আটটি বিভাগে রাতে কারফিউ জারি করা হয়।
মণিপুরে যত মানুষ রয়েছেন তার মধ্যে ৫৩ শতাংশই মেতিস গোষ্ঠীর মানুষ। কিন্ত তারা উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে বসতি স্থাপন করতে পারেন না। পুরো মণিপুরের মাত্র ১১ শতাংশ স্থানে বিশেষ করে মণিপুর উপত্যকায় বসবাস রয়েছে তাদের।
মেতিস গোষ্ঠীর দাবি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে অবৈধ অভিবাসীরা আসায় তারা অনেক সমস্যায় পড়ছে। এ কারণে নিজেদের স্কেজিউলড ট্রাইবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছিল তারা।
পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ায় সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন জায়গা থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে। এছাড়া রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছেন সেনা সদস্যরা। ৭ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর অবকাঠামোয় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও রাজধানী ইম্ফালে বুধবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায় বিভিন্ন দোকানপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্র সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের (আরএএফ) সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।