সারাদেশ

সঙ্গী হারিয়ে হাতিদের আহাজারি, শাবকটি খুঁজে বেড়াচ্ছে মাকে

মাত্র ২ দিন বয়সের মাতৃহারা হাতির শাবকটি ক্ষণে ক্ষণে মাকে খুঁজে ফিরছে। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে কোথাও মা আছে কিনা। এই পুরুষ হাতির শাবকটির স্থান হয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে।

পার্কটির হাতির মাহুত সুশিল চাকমাই এখন এতিম শাবকটির অভিভাবক।
কিছুক্ষণ পর পরই ল্যাকটোজেন দুধ দেওয়া হচ্ছে হাতির শাবকটিকে। ক্ষুধায় ছটফট করা শাবকটি কিছুক্ষণ দুধ পান করে। এরপর আবার এদিক ওদিক তাকিয়ে মাকে খুঁজছে।
টেকনাফের হোয়াইক্যং বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মিনার চৌধুরী কালের কণ্ঠকে জানান, গত রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিকালে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের টেকনাফের হোয়াইক্যং বন রেঞ্জের আওতায় গহীন পাহাড়ে একটি মা হাতি শাবকটি প্রসব করে।
এরপর পরই মা হাতিটি মাটিতে গড়াগড়ি আর গোঙ্গাতে গোঙ্গাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এ সময় ১০/১২টি হাতির পাল মা হাতিটিকে ঘিরে আহাজারিতে মেতেছিল।
গতকাল সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রেঞ্জ কর্মকর্তা ভেটেরিনারি চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, গত রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে মা হাতিটি প্রসব করেছিল তার প্রথম বাচ্চা। বাচ্চাটি স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত মোটা হওয়ার কারণে প্রসব বেদনায় মা হাতিটির জরায়ু বেরিয়ে পড়ে।
এ কারণে এটি মারা যায় বলে ময়নাতদন্তকারি ভেটেরিনারি চিকিৎসকের প্রাথমিক ধারণা।
তিনি জানান, মা হাতিটি মারা যাওয়ার পর রবিবার রাতে শাবকটি উদ্ধার করা হয়। সেই শাবকটি উদ্ধারের পর পরই রাত আড়াইটার দিকে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের হাতি লালন পালনে নিয়োজিত মাহুত সুশিল চাকমা কালের কণ্ঠকে গতকাল সোমবার রাতে বলেন, ‘বড্ড মায়া লাগে এতিম বাচ্চাটির জন্য। কিছুক্ষণ পর পরই এটি তার মাকে খুঁজে—এটা আমি বুঝতে পারি।
আমি তার বেদনা ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছি। এ জন্য কিছুক্ষণ পর পরই ল্যাকটোজেনের বোতলটা এগিয়ে দিই। সেও নিপল মুখে নিয়ে দুধ পান করে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *