১১:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত রুমা ভুগছেন মেরুদণ্ডের সমস্যায়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৮ জন শহীদ ও ৩৬ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন রুমা আক্তার (২৬)। তার বাড়ি জেলার নাসিরনগর উপজেলার নুরপুর গ্রামে। গত ৪ আগস্ট গাজীপুরের টঙ্গীর আজিমপুর এলাকায় (টিঅ্যান্ডটি মোড়) তিনি আহত হন।
পুলিশ ও কিছু সাদা পোশাকধারী যুবকের পিটুনিতে পড়ে গিয়ে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। পড়ে যাওয়ার পর অনেকে তার ওপর দিয়ে যাওয়ার কারণেও তিনি আঘাত পান। এ অবস্থা নিয়েই ৫ আগস্ট আবার আন্দোলনে শরিক হন তিনি।
ধীরে ধীরে শারীরিক সমস্যা বাড়তে থাকে রুমার।

প্রথমদিকে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খেতেন। সমস্যা বাড়তে থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে জানতে পারেন মেরুদণ্ডে সমস্যা। কোথাও বসতে হলে এক ধরনের টিউবে বসার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তবে আর্থিক সমস্যার কারণে সেটা কেনা হয়নি।
যে কারণে কাপড় পেঁচিয়ে বসেন তিনি।
নুরপুর গ্রামের আন্নর আলীর মেয়ে রুমা স্বামীর সঙ্গে থাকেন ঢাকার আজিমপুর এলাকায়ই। রাজশাহীর বাসিন্দা স্বামী রুবেল আহমেদ একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি থেকে মাসে ১৫ হাজার টাকার মতো আয় করেন। এক সন্তানকে নিয়ে তাদের বেশ টানাপড়েনের সংসার। তবে মাদরাসার কিছু শিক্ষার্থী পড়িয়ে সংসারে জোগান দেন রুমা।
আন্দোলন নিয়ে কথা হলে রুমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন আন্দোলনে ছিলেন। আমার চাচাতো ভাই মাহবুবও আন্দোলনের সময় গুলিতে আহত হন। এসব বিষয় মাথায় কাজ করছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন কী বলবে তার ভয়ে কিছু করতে পারছিলাম না। তবে প্রতিদিনই আন্দোলন যেখানে হতো, সেখানে ছুটে যেতাম। ৪ আগস্ট স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে সরাসরি যোগ দিই।

দুজন একসঙ্গেই ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। আমি পড়ে যাই। আমার ওপর দিয়ে লোকজন ছুটতে থাকে। পুলিশ ও সাদা পোশাকে থাকা কিছু যুবক আমাকে বেদম পেটায়। আমার স্বামী আমাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। শরীরে ব্যথা নিয়ে আবার পরদিন যাই। শুরুর দিকে শরীরের অবস্থা বুঝতে পারিনি। কিন্তু দিন দিন অবস্থা খারাপ হতে থাকে।’
রুমা আক্তার আরো বলেন, ‘এখন আগের চেয়ে শরীর অনেকটা ভালো। তবে মেরুদণ্ডে সমস্যা রয়ে গেছে। চিকিৎসক বলেছেন, যেখানেই বসি নরম কিছুতে যেন বসি। একটি বিশেষ টিউব কিনতে বলেছেন। কিন্তু আর্থিক দিক চিন্তা করে সেটা কেনা হয়নি। এখন নরম কাপড় দিয়ে বসি।’

ট্যাগ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত রুমা ভুগছেন মেরুদণ্ডের সমস্যায়

আপডেট সময়ঃ ০২:০৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৮ জন শহীদ ও ৩৬ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন রুমা আক্তার (২৬)। তার বাড়ি জেলার নাসিরনগর উপজেলার নুরপুর গ্রামে। গত ৪ আগস্ট গাজীপুরের টঙ্গীর আজিমপুর এলাকায় (টিঅ্যান্ডটি মোড়) তিনি আহত হন।
পুলিশ ও কিছু সাদা পোশাকধারী যুবকের পিটুনিতে পড়ে গিয়ে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। পড়ে যাওয়ার পর অনেকে তার ওপর দিয়ে যাওয়ার কারণেও তিনি আঘাত পান। এ অবস্থা নিয়েই ৫ আগস্ট আবার আন্দোলনে শরিক হন তিনি।
ধীরে ধীরে শারীরিক সমস্যা বাড়তে থাকে রুমার।

প্রথমদিকে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খেতেন। সমস্যা বাড়তে থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে জানতে পারেন মেরুদণ্ডে সমস্যা। কোথাও বসতে হলে এক ধরনের টিউবে বসার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তবে আর্থিক সমস্যার কারণে সেটা কেনা হয়নি।
যে কারণে কাপড় পেঁচিয়ে বসেন তিনি।
নুরপুর গ্রামের আন্নর আলীর মেয়ে রুমা স্বামীর সঙ্গে থাকেন ঢাকার আজিমপুর এলাকায়ই। রাজশাহীর বাসিন্দা স্বামী রুবেল আহমেদ একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি থেকে মাসে ১৫ হাজার টাকার মতো আয় করেন। এক সন্তানকে নিয়ে তাদের বেশ টানাপড়েনের সংসার। তবে মাদরাসার কিছু শিক্ষার্থী পড়িয়ে সংসারে জোগান দেন রুমা।
আন্দোলন নিয়ে কথা হলে রুমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন আন্দোলনে ছিলেন। আমার চাচাতো ভাই মাহবুবও আন্দোলনের সময় গুলিতে আহত হন। এসব বিষয় মাথায় কাজ করছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন কী বলবে তার ভয়ে কিছু করতে পারছিলাম না। তবে প্রতিদিনই আন্দোলন যেখানে হতো, সেখানে ছুটে যেতাম। ৪ আগস্ট স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে সরাসরি যোগ দিই।

দুজন একসঙ্গেই ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। আমি পড়ে যাই। আমার ওপর দিয়ে লোকজন ছুটতে থাকে। পুলিশ ও সাদা পোশাকে থাকা কিছু যুবক আমাকে বেদম পেটায়। আমার স্বামী আমাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। শরীরে ব্যথা নিয়ে আবার পরদিন যাই। শুরুর দিকে শরীরের অবস্থা বুঝতে পারিনি। কিন্তু দিন দিন অবস্থা খারাপ হতে থাকে।’
রুমা আক্তার আরো বলেন, ‘এখন আগের চেয়ে শরীর অনেকটা ভালো। তবে মেরুদণ্ডে সমস্যা রয়ে গেছে। চিকিৎসক বলেছেন, যেখানেই বসি নরম কিছুতে যেন বসি। একটি বিশেষ টিউব কিনতে বলেছেন। কিন্তু আর্থিক দিক চিন্তা করে সেটা কেনা হয়নি। এখন নরম কাপড় দিয়ে বসি।’