০৭:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নীরবে-নিভৃতেই প্রস্থান প্রবীর মিত্রের, খোঁজ রাখেনি রুপালি সারথিরা

 

না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার প্রবীণ অভিনেতা ‘রঙিন নবাব’ খ্যাত প্রবীর মিত্র। মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই বর্ষীয়ান অভিনেতার মৃত্যু হয়।

প্রবীন অভিনেতা প্রবীর মিত্রের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিনোদন অঙ্গনে।

সদ্যই মারা গেছেন অভিনেত্রী অঞ্জনা। একদিনের ব্যবধানেই চলে গেলে প্রবীর মিত্র। অভিনেতার মৃত্যুর পর সহকর্মী তারকারা একের পর এক শোক জানাচ্ছেন। তবে জীবনের শেষ দিনগুলো নীরবে-নিভৃতেই কাটিয়েছেন অভিনেতা।
রুপালি পর্দার তেমন কেউ খোঁজ রাখেননি তার। এর আগে প্রবীর মিত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল।
১৮ আগস্ট প্রবীর মিত্রের জন্মদিন। গত বছরের এই দিনে নন্দিত এ অভিনেতার পরিবার আক্ষেপ করেছিল, সিনেমার মানুষেরা তাঁর খোঁজটুকুও নিতেন না।

দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ছিলেন অসুস্থ। তবে গত কয়েক বছরে একেবারে নাজুক হয়ে পড়েছিলেন। নীরবে-নিভৃতে পরিবারের সঙ্গেই কেটেছে সময়।
ঢালিউডে প্রবীর মিত্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল প্রয়াত এ টি এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে। ইচ্ছা ছিল বন্ধুর সঙ্গে ফের দেখা করবেন, আড্ডা দেবেন।
কিন্তু নিজের অসুস্থতা আর বন্ধুর মৃত্যুতে সে ইচ্ছাটা পূরণ হয়নি।
কিছুদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সে খবর প্রকাশ্যে এলেও সহকর্মীদের কেউ এগিয়ে আসেননি বলেও আক্ষেপ করেছেন অভিনেতার পুত্র মিঠুন। চিকিৎসার জন্য সরকারি সহযোগিতাও চেয়েছিলেন। তবে তার আগেই গতকাল রাতে তিনি পাড়ি জমালেন না-ফেরার দেশে।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর মিত্র ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ শিরোনামে সিনেমার মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়।

ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক চরিত্রে দেখা গেলেও বেশির ভাগ সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখা মিলেছে তাঁর। অভিনয়ের বাইরে প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন অধিনায়ক। একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এ ছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় অভিনয় শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এইচ আকবর পরিচালত ‘জলছবি’ ছবিতে চিকিৎসকের চরিত্রের মধ্যে দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে সূচনা হয় তাঁর। এরপর একই পরিচালকের ‘জীবন তৃষ্ণা’ ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন।

প্রবীর মিত্রের এক মেয়ে ও তিন ছেলে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার পুরস্কার ভাগ্য প্রসন্ন নয়। কেবল ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।

ট্যাগ

প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করি, কিন্তু কর্মসংস্থান ধ্বং/স কোন সমাধান নয়: আশিক চৌধুরী

নীরবে-নিভৃতেই প্রস্থান প্রবীর মিত্রের, খোঁজ রাখেনি রুপালি সারথিরা

আপডেট সময়ঃ ০১:১৩:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

 

না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার প্রবীণ অভিনেতা ‘রঙিন নবাব’ খ্যাত প্রবীর মিত্র। মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই বর্ষীয়ান অভিনেতার মৃত্যু হয়।

প্রবীন অভিনেতা প্রবীর মিত্রের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিনোদন অঙ্গনে।

সদ্যই মারা গেছেন অভিনেত্রী অঞ্জনা। একদিনের ব্যবধানেই চলে গেলে প্রবীর মিত্র। অভিনেতার মৃত্যুর পর সহকর্মী তারকারা একের পর এক শোক জানাচ্ছেন। তবে জীবনের শেষ দিনগুলো নীরবে-নিভৃতেই কাটিয়েছেন অভিনেতা।
রুপালি পর্দার তেমন কেউ খোঁজ রাখেননি তার। এর আগে প্রবীর মিত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল।
১৮ আগস্ট প্রবীর মিত্রের জন্মদিন। গত বছরের এই দিনে নন্দিত এ অভিনেতার পরিবার আক্ষেপ করেছিল, সিনেমার মানুষেরা তাঁর খোঁজটুকুও নিতেন না।

দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ছিলেন অসুস্থ। তবে গত কয়েক বছরে একেবারে নাজুক হয়ে পড়েছিলেন। নীরবে-নিভৃতে পরিবারের সঙ্গেই কেটেছে সময়।
ঢালিউডে প্রবীর মিত্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল প্রয়াত এ টি এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে। ইচ্ছা ছিল বন্ধুর সঙ্গে ফের দেখা করবেন, আড্ডা দেবেন।
কিন্তু নিজের অসুস্থতা আর বন্ধুর মৃত্যুতে সে ইচ্ছাটা পূরণ হয়নি।
কিছুদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সে খবর প্রকাশ্যে এলেও সহকর্মীদের কেউ এগিয়ে আসেননি বলেও আক্ষেপ করেছেন অভিনেতার পুত্র মিঠুন। চিকিৎসার জন্য সরকারি সহযোগিতাও চেয়েছিলেন। তবে তার আগেই গতকাল রাতে তিনি পাড়ি জমালেন না-ফেরার দেশে।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর মিত্র ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ শিরোনামে সিনেমার মধ্য দিয়েছে বড়পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়।

ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক চরিত্রে দেখা গেলেও বেশির ভাগ সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখা মিলেছে তাঁর। অভিনয়ের বাইরে প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন অধিনায়ক। একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এ ছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় অভিনয় শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এইচ আকবর পরিচালত ‘জলছবি’ ছবিতে চিকিৎসকের চরিত্রের মধ্যে দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে সূচনা হয় তাঁর। এরপর একই পরিচালকের ‘জীবন তৃষ্ণা’ ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন।

প্রবীর মিত্রের এক মেয়ে ও তিন ছেলে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার পুরস্কার ভাগ্য প্রসন্ন নয়। কেবল ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।