বাংলাদেশ

বেতনের টাকা কাটছিল ঋণদান প্রতিষ্ঠান, কর্মীর আত্মহত্যা

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে (৩৮) নামে বেসরকারি ঋণদান প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তার স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, ঋণের কিস্তি আদায়ে প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ প্রয়োগ ও বেতনের টাকা কেটে নেওয়ায় হতাশ হয়ে শুক্লা দে আত্মহত্যা করেছেন।

রোববার (৫ জানুয়ারি) বোয়ালখালী থানায় করা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় শুক্লার স্বামী সিদুল পাল রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায়ের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথসহ (৪৫) চারজনকে আসামি করেন। অন্য তিন আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মী নন্দন (৪০), চিনু বিশ্বাস (৪২) ও পলাশ নাথ (৪৩)।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুল ইসলাম।

নিহত শুক্লা দে রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহত শুক্লা এক ছেলে ও এক মেয়ের মা।

শুক্লার স্বামী সিদুল পাল এজাহারে অভিযোগ করেন, সংস্থাটির কানুনগোপাড়া শাখায় ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন শুক্লা। সংস্থাটি এলাকায় মানুষজনকে ক্ষুদ্রঋণ দেয়। এসব ঋণ কিস্তি আকারে আদায় করতেন তিনি। ৫ আগস্টের পর থেকে কিস্তি আদায়ে ধীরগতি ছিল। কিস্তি আদায়ের জন্য গেলে শুক্লাকে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হতো।

এজাহারে আরও বলা হয়, সংস্থার ম্যানেজার কাঞ্চনসহ অন্যরা কিস্তি আদায়ে শুক্লাকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। এরপর সংস্থাটি শুক্লার মাসিক বেতন থেকে অনাদায়ি কিস্তির টাকা কেটে নিচ্ছিল। এ ছাড়া নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছিল। কাজের চাপ সইতে না পেরে শনিবার সন্ধ্যায় রান্নাঘরের বিমের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

অভিযোগে বলা হয়, গত নভেম্বর মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনের মধ্যে শুক্লাকে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পটিয়ার ধলঘাট এলাকায় বদলি করে শুক্লাকে। এ নিয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

বোয়ালখালী থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক কাঞ্চন দেবনাথকে কল করেও পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *