জাতীয়

এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চান ৬১.১% মানুষ

 

Play Video

অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন থাকবে, কবে নির্বাচন হবে, এমন আলোচনা এখন সবখানে। কেউ দ্রুত নির্বাচন চায়, আবার কেউ চায় সংস্কারের পর। তবে কোনটা হবে তা নিয়ে অনেকেই জরিপ করছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে জরিপ করেছে ভয়েস অব আমেরিকাও।

Play Video

জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৬১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। জরিপে আরেকটি প্রশ্ন ছিল যেখানে ৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ ভোটি দিয়েছে। প্রশ্নটি ছিল অন্তর্বর্তী সরকার যা যা সংস্কার করা প্রয়োজন মনে করবে তার সবগুলো করার পরই নির্বাচন আয়োজন করা উচিত।
এ ছাড়াও ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ লোক চান দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন আর ৮ দশমিক ৬ শতাংশ নির্বাচন চান ১৮ মাসের মধ্যে। সবচেয়ে কম ৫ দশমিক ৮ শতাংশ জনগণ চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর আগামী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

Play Video

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কেমন আছে বাংলাদেশ, এ নিয়ে কী ভাবছেন দেশের নাগরিকরা, এ বিষয়ে অক্টোবরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ, ভয়েস অফ আমেরিকা দেশব্যাপী একটি জরিপ করে।
সুনির্দিষ্ট প্রশ্নমালার ওপর ভিত্তি করে কম্পিউটার এসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউইং এর মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগে ১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়।

Play Video

জরিপে অংশ নেওয়া শহরের জনগণের ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ ও গ্রামে বাস করেন তাদের ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ আগামী এক বছরের মধ্যে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন চান। জরিপে অংশগ্রণকারী পুরুষদের ৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ নির্বাচন চান এক বছরের মধ্যে।

Play Video

তরুণদের মধ্যে (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ এক বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন চান আর ৩৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যারা জরিপে অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন চান ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ।

Play Video

শহরাঞ্চলের ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ ও গ্রামীণ এলাকার ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ জরিপে অংশগ্রহণকারী চান আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন। দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন জরিপে অংশ নেওয়া পুরুষদের ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। ১৮ থেকে ৩৪ বছরের তরুণদের ১৫ দশমিক ২ ও ৩৫ ও তার চেয়ে বেশি বয়সের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২২ দশমিক ৪ শতাংশ মনে করেন দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন হওয়া উচিত।

১৮ মাসের মধ্যে আগামী নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন শহরের ১০ দশমিক ৩, গ্রামের ৮, পুরুষদের ১২ নারীদের ৫ দশমিক ২, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৮ দশমিক ৬ এবং ৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের মধ্যে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।

চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন, শহরের ৬ দশমিক ২, গ্রামের ৫ দশমিক ৭, পুরুষদের ৬ দশমিক ৯, নারীদের ৪ দশমিক ৮, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৭ দশমিক ৬,৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের ৪ শতাংশ মানুষ।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে দ্রুত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছে।

কিন্তু, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। তাদের বক্তব্য, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করার পরই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায়োরিটি ‘সংস্কার’।

এদিকে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের প্লাটফর্ম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলছে রাষ্ট্র সংস্কার এর কাজগুলো শেষ হবার আগে নির্বাচন হলে আবার নতুন করে তাদের ভাষায় ‘ফ্যাসিবাদের’ আবির্ভাব ঘটবে। তারা বলছে, কেবল একটি নির্বাচন করার জন্য ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হয়নি।

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূসকে ভয়েস অফ আমেরিকাতে দেওয়া তার এক সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদই নির্বাচনের তারিখ জানাবে।

ডক্টর ইউনূস এখনো নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা না করলেও অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ১৭ নভেম্বর তিনি বলেছেন, নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপও (রূপরেখা) পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারের কাজ শেষ করেই নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। অবশ্য সংস্কারের জন্য নির্বাচন কয়েক মাস বিলম্বিতও করা যেতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ডক্টর আসিফ নজরুল ১৯ নভেম্বর বলেছেন, অতি প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button