০৬:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুমরার বোলিং অ্যাকশন কি বৈধ

 

একজন বোলার অবলীলায় ইয়র্কার দিয়ে যাচ্ছেন, ধারাবাহিকভাবে একই চ্যানেলে বল ফেলে যাচ্ছেন কিংবা ব্যাটসম্যানদের ক্রমাগত বেকায়দায় ফেলছেন—বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বে এমন বোলারের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ খুব সম্ভবত যশপ্রীত বুমরা।

ব্যাটসম্যানদের জমানাতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে চলা বুমরা গতকাল থেকে আবারও আলোচনায়। পার্থ টেস্ট দিয়ে কাল শুরু হওয়া বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে তিনিই ভারতকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হওয়ার পরও ৪৬ রানের লিড নিয়েছে বুমরার নৈপুণ্যের কারণেই।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপ একরকম ধসিয়ে দিয়েছেন ৩০ বয়স বয়সী এই ফাস্ট বোলার। কাল প্রথম দিনে ৪ উইকেটের পর আজ দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ফিরিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারিকে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১১ বার ইনিংসে কমপক্ষে ৫ উইকেট নিলেন তিনি, যা ভারতীয় পেসারদের মধ্যে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়াকে ধসিয়ে দেওয়ার পর বুমরাকে নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অস্ট্রেলিয়ানদের কারও কারও প্রশ্ন, তাঁর বোলিং অ্যাকশন আদৌ বৈধ কি না!

একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘এই অ্যাকশন নিয়ে যশপ্রীত বুমরা বল করার অনুমতি পেল কীভাবে? এটা তো পরিষ্কার চাকিং।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ফক্স ক্রিকেট বুমরার বোলিং কৌশল স্লো মোশনে বিশ্লেষণ করেছে। এ সময় আমি তাঁর (স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে) বাঁকানো কনুই ও চাকিং দেখতে পেলাম।’
তবে ভারতীয় সমর্থকেরা বিষয়টিকে দেখছেন ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ হিসেবে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোনো বোলার ভালো করলেই তাঁর বিরুদ্ধে লেগে পড়া অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য নতুন কোনো ঘটনা নয়।

এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সম্ভবত মুত্তিয়া মুরালিধরন। ’৯০-এর দশকে একাধিক ম্যাচে লঙ্কান কিংবদন্তির বোলিং অ্যাকশন অবৈধ প্রমাণ করতে যেন উঠেপড়ে লেগেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ৩ আম্পায়ার টনি ম্যাককুইলান, রস এমারসন ও ড্যারেল হেয়ার।
বুমরাও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের জন্য দুর্বোধ্য হয়ে ওঠায় তাঁর বোলিং অ্যাকশনও অবৈধ প্রমাণের চেষ্টা চলছে বলে মনে করেন ভারতের এক সমর্থক। তিনি লিখেছেন, ‘একদম মুরালির মতোই। এটা এমন কিছু, যা জন্মগতভাবে তৈরি হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে (অভিযোগ দিতে) পারেন না।’

ইয়াহু স্পোর্টস অস্ট্রেলিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুমরার বোলিং অ্যাকশনের সঙ্গে অন্য কারও মিল নেই, তা সবার জানা। অপ্রচলিত অ্যাকশনের কারণে তাঁর বল সামলানো কঠিন বলে মনে করেন অনেকে। তবে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির অন্যতম সম্প্রচারকারী চ্যানেল ফক্স ক্রিকেট কাল সাইড অ্যাঙ্গেল থেকে বুমরার বল ছাড়ার মুহূর্ত দেখানোর পর অনেকের মনেই বিস্ময় জেগেছে।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বোলার বল ছাড়ার সময় কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকালে তা অবৈধ। বুমরাও বল করার সময় যে মাত্রায় কনুই বাঁকিয়ে থাকেন, তা ১৫ ডিগ্রির বেশি বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
একজন আম্পায়ারের কাছে যদি কোনো বোলারের অ্যাকশন সন্দেহজনক মনে হয়, তাহলে তিনি ম্যাচ রেফারির কাছে রিপোর্ট করতে পারেন। এরপর আইসিসি স্বীকৃতি বায়োমেকানিক্‌স টেস্টিং সেন্টারে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বোলারকে তাঁর অ্যাকশন পরীক্ষা করাতে হয়। কিন্তু বুমরার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়াররা কখনো অভিযোগ জানাননি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো অনেক দূরের ব্যাপার।
বুমরার অ্যাকশন কেন অবৈধ নয়
বোলিংয়ের সময় বুমরার কনুই বেশি বাঁকছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা আসলে চাকিং নয়। বরং অতিমাত্রায় প্রসারণ। যেটাকে শরীরবিদ্যার ভাষায় বলা হয় ‘হাইপারএক্সটেনশন’। অর্থাৎ জন্মগতভাবেই বুমরার কনুই স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি প্রসারিত হয়।

একজন মানুষের হাড়ের সংযোগস্থলগুলো স্বাভাবিক সীমার চেয়ে বেশি নড়াচড়া করলে সেটাকে বলা হয় ‘হাইপারমোবিলিটি’। এই হাইপারমোবিলিটির কারণেই সাইড অ্যাঙ্গেল থেকে বুমরার বোলিং অ্যাকশন অবৈধ মনে হয়।
এ ধরনের বোলিং অ্যাকশনের সঙ্গে কিছুটা মিল পাওয়া যায় পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ হাসনাইনের। তাঁর অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। আইসিসি–স্বীকৃত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা দেওয়ার পর অ্যাকশনে কোনো ধরনের ত্রুটি ধরা না পড়লে সে বছরের জুনে হাসনাইনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

কেন হাসনাইনের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল, কেন বুমরাকে কখনোই পরীক্ষাগারে যেতে হয়নি—এর ব্যাখ্যা সেই সময়ই দিয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক বোলিং কোচ ইয়ান পন্ট।

এক্সে বুমরার বোলিং অ্যাকশনের ছবি পোস্ট করে পন্ট লিখেছিলেন, ‘আপনারা সহজেই তার (বুমরার) হাতের কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত দেখতে পারছেন। নিয়ম হলো যখন এটা উলম্বের ওপরে থাকে, তখন কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকানো যাবে না। আপনারা স্পষ্টভাবে তার বাহুর সামনের বাঁক দেখতে পারছেন। এটা অতি প্রসারণ। যে সব মানুষের হাড়ের সংযোগস্থলগুলো স্বাভাবিক সীমার চেয়ে বেশি নড়াচড়া করে, তাদের ক্ষেত্রে এভাবে বোলিং করায় কোনো বাধা নেই।’
গত জুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ডেভিড ওয়ার্নার অতীতে অনেকবার বুমরার মুখোমুখি হয়েছেন। বুমরাকে খেলা কেন কঠিন, ওয়ার্নার এর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন পার্থ টেস্ট শুরুর আগে, ‘বুমরার বলে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তাঁর অ্যাকশনের সঙ্গে অভ্যস্ত না থাকা। আপনি যদি ওর বল আগে না খেলে থাকেন, তাহলে বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।’
হাইপারমোবিলিটির কারণে বুমরা দুই ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে মত ইংল্যান্ডের নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেকানিক্‌স বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পল ফেলটনের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি টেলিগ্রাফকে ফেলটন বলেছেন, ‘একটি বিষয় হলো সে অনেক বেশি সময় ধরে বল ধরে রাখতে পারে, যেটা গতি বাড়াতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়টি হলো বল ছাড়ার সময় সে ব্যাটসম্যানের কাছাকাছি অবস্থানে যেতে পারে, যা ব্যাটসম্যানের রিঅ্যাকশন টাইম (বল ছাড়ার পর ব্যাটসম্যানের ব্যাটে পৌঁছানোর সময়) কমিয়ে দেয়।’

ট্যাগ

বুমরার বোলিং অ্যাকশন কি বৈধ

আপডেট সময়ঃ ০৫:৩৪:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

 

একজন বোলার অবলীলায় ইয়র্কার দিয়ে যাচ্ছেন, ধারাবাহিকভাবে একই চ্যানেলে বল ফেলে যাচ্ছেন কিংবা ব্যাটসম্যানদের ক্রমাগত বেকায়দায় ফেলছেন—বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বে এমন বোলারের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ খুব সম্ভবত যশপ্রীত বুমরা।

ব্যাটসম্যানদের জমানাতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে চলা বুমরা গতকাল থেকে আবারও আলোচনায়। পার্থ টেস্ট দিয়ে কাল শুরু হওয়া বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে তিনিই ভারতকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হওয়ার পরও ৪৬ রানের লিড নিয়েছে বুমরার নৈপুণ্যের কারণেই।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপ একরকম ধসিয়ে দিয়েছেন ৩০ বয়স বয়সী এই ফাস্ট বোলার। কাল প্রথম দিনে ৪ উইকেটের পর আজ দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ফিরিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারিকে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১১ বার ইনিংসে কমপক্ষে ৫ উইকেট নিলেন তিনি, যা ভারতীয় পেসারদের মধ্যে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়াকে ধসিয়ে দেওয়ার পর বুমরাকে নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অস্ট্রেলিয়ানদের কারও কারও প্রশ্ন, তাঁর বোলিং অ্যাকশন আদৌ বৈধ কি না!

একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘এই অ্যাকশন নিয়ে যশপ্রীত বুমরা বল করার অনুমতি পেল কীভাবে? এটা তো পরিষ্কার চাকিং।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ফক্স ক্রিকেট বুমরার বোলিং কৌশল স্লো মোশনে বিশ্লেষণ করেছে। এ সময় আমি তাঁর (স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে) বাঁকানো কনুই ও চাকিং দেখতে পেলাম।’
তবে ভারতীয় সমর্থকেরা বিষয়টিকে দেখছেন ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ হিসেবে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোনো বোলার ভালো করলেই তাঁর বিরুদ্ধে লেগে পড়া অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য নতুন কোনো ঘটনা নয়।

এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সম্ভবত মুত্তিয়া মুরালিধরন। ’৯০-এর দশকে একাধিক ম্যাচে লঙ্কান কিংবদন্তির বোলিং অ্যাকশন অবৈধ প্রমাণ করতে যেন উঠেপড়ে লেগেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ৩ আম্পায়ার টনি ম্যাককুইলান, রস এমারসন ও ড্যারেল হেয়ার।
বুমরাও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের জন্য দুর্বোধ্য হয়ে ওঠায় তাঁর বোলিং অ্যাকশনও অবৈধ প্রমাণের চেষ্টা চলছে বলে মনে করেন ভারতের এক সমর্থক। তিনি লিখেছেন, ‘একদম মুরালির মতোই। এটা এমন কিছু, যা জন্মগতভাবে তৈরি হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে (অভিযোগ দিতে) পারেন না।’

ইয়াহু স্পোর্টস অস্ট্রেলিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুমরার বোলিং অ্যাকশনের সঙ্গে অন্য কারও মিল নেই, তা সবার জানা। অপ্রচলিত অ্যাকশনের কারণে তাঁর বল সামলানো কঠিন বলে মনে করেন অনেকে। তবে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির অন্যতম সম্প্রচারকারী চ্যানেল ফক্স ক্রিকেট কাল সাইড অ্যাঙ্গেল থেকে বুমরার বল ছাড়ার মুহূর্ত দেখানোর পর অনেকের মনেই বিস্ময় জেগেছে।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বোলার বল ছাড়ার সময় কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকালে তা অবৈধ। বুমরাও বল করার সময় যে মাত্রায় কনুই বাঁকিয়ে থাকেন, তা ১৫ ডিগ্রির বেশি বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
একজন আম্পায়ারের কাছে যদি কোনো বোলারের অ্যাকশন সন্দেহজনক মনে হয়, তাহলে তিনি ম্যাচ রেফারির কাছে রিপোর্ট করতে পারেন। এরপর আইসিসি স্বীকৃতি বায়োমেকানিক্‌স টেস্টিং সেন্টারে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বোলারকে তাঁর অ্যাকশন পরীক্ষা করাতে হয়। কিন্তু বুমরার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়াররা কখনো অভিযোগ জানাননি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো অনেক দূরের ব্যাপার।
বুমরার অ্যাকশন কেন অবৈধ নয়
বোলিংয়ের সময় বুমরার কনুই বেশি বাঁকছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা আসলে চাকিং নয়। বরং অতিমাত্রায় প্রসারণ। যেটাকে শরীরবিদ্যার ভাষায় বলা হয় ‘হাইপারএক্সটেনশন’। অর্থাৎ জন্মগতভাবেই বুমরার কনুই স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি প্রসারিত হয়।

একজন মানুষের হাড়ের সংযোগস্থলগুলো স্বাভাবিক সীমার চেয়ে বেশি নড়াচড়া করলে সেটাকে বলা হয় ‘হাইপারমোবিলিটি’। এই হাইপারমোবিলিটির কারণেই সাইড অ্যাঙ্গেল থেকে বুমরার বোলিং অ্যাকশন অবৈধ মনে হয়।
এ ধরনের বোলিং অ্যাকশনের সঙ্গে কিছুটা মিল পাওয়া যায় পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ হাসনাইনের। তাঁর অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। আইসিসি–স্বীকৃত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা দেওয়ার পর অ্যাকশনে কোনো ধরনের ত্রুটি ধরা না পড়লে সে বছরের জুনে হাসনাইনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

কেন হাসনাইনের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল, কেন বুমরাকে কখনোই পরীক্ষাগারে যেতে হয়নি—এর ব্যাখ্যা সেই সময়ই দিয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক বোলিং কোচ ইয়ান পন্ট।

এক্সে বুমরার বোলিং অ্যাকশনের ছবি পোস্ট করে পন্ট লিখেছিলেন, ‘আপনারা সহজেই তার (বুমরার) হাতের কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত দেখতে পারছেন। নিয়ম হলো যখন এটা উলম্বের ওপরে থাকে, তখন কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকানো যাবে না। আপনারা স্পষ্টভাবে তার বাহুর সামনের বাঁক দেখতে পারছেন। এটা অতি প্রসারণ। যে সব মানুষের হাড়ের সংযোগস্থলগুলো স্বাভাবিক সীমার চেয়ে বেশি নড়াচড়া করে, তাদের ক্ষেত্রে এভাবে বোলিং করায় কোনো বাধা নেই।’
গত জুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ডেভিড ওয়ার্নার অতীতে অনেকবার বুমরার মুখোমুখি হয়েছেন। বুমরাকে খেলা কেন কঠিন, ওয়ার্নার এর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন পার্থ টেস্ট শুরুর আগে, ‘বুমরার বলে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তাঁর অ্যাকশনের সঙ্গে অভ্যস্ত না থাকা। আপনি যদি ওর বল আগে না খেলে থাকেন, তাহলে বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।’
হাইপারমোবিলিটির কারণে বুমরা দুই ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে মত ইংল্যান্ডের নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেকানিক্‌স বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পল ফেলটনের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি টেলিগ্রাফকে ফেলটন বলেছেন, ‘একটি বিষয় হলো সে অনেক বেশি সময় ধরে বল ধরে রাখতে পারে, যেটা গতি বাড়াতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়টি হলো বল ছাড়ার সময় সে ব্যাটসম্যানের কাছাকাছি অবস্থানে যেতে পারে, যা ব্যাটসম্যানের রিঅ্যাকশন টাইম (বল ছাড়ার পর ব্যাটসম্যানের ব্যাটে পৌঁছানোর সময়) কমিয়ে দেয়।’