রংপুর নগরের জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি পায়নি ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’। তবে শহর থেকে দূরে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে সংগঠনটিকে সমাবেশ করতে বলা হয়েছে।
সনাতন জাগরণ মঞ্চ রংপুরের সমন্বয়ক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করতে জেলা প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর পরিবর্তে রংপুর শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সমাবেশ করতে বলা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২০ নভেম্বর) সনাতনী সংগঠনটিকে বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার জাকিয়া সুলতানার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রংপুর জেলা স্কুল শহরের কেন্দ্রস্থলে হওয়ায় এ জায়গায় জনসমাগম হলে শহরের ব্যাপক যানজট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই ভেন্যু পরিবর্তন করে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে অনুমতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অনুমতির চিঠিতে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যার আগে কর্মসূচি শেষ করতে বলা হয়। এ ছাড়া ধর্মীয় উসকনিমূলক বা রাষ্ট্রবিরোধী বা হিন্দু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য না ছড়ানোসহ ১৫টি শর্ত দেওয়া হয়।’
পরে জেলা প্রশাসক নির্ধারিত ভেন্যুতে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাস প্রদান করে।
এ বিষয়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘তারা মহাসমাবেশ করার জন্য জিলা স্কুল ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু আমরা সার্বিক বিবেচনায় সর্বসম্মতিক্রমে রংপুর জিলা স্কুল মাঠের পরিবর্তে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জিলা স্কুল শহরের প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় যে কোনো ধরনের সমাবেশকে ঘিরে পুরো শহর জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এখানে সভা-সমাবেশকে ঘিরে নগরবাসীর ভোগান্তি নিয়ে অনেক অভিযোগও আছে।’
এ বিষয়ে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী কালবেলাকে বলেন, ‘রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশের অনুমতি চাইলে প্রথমে প্রশাসন আশ্বাস দিলেও পরে তা বাতিল করে। মুসলিম ও মসজিদ অধ্যুষিত অঞ্চল মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ওখানে আমরা নিরাপদ মনে করিনি। আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আমাদের সঙ্গে রংপুরের কোনো লোক না থাকায় ওনি দেখা করেননি। এ ঘটনা আমাদেরকে খুব আহত করেছে।’
সমাবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদের প্রতিষ্ঠাতা বরণ কুশল চক্রবর্তী, চট্টগ্রামের গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ওমেশানন্দ গিরি মহারাজ, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের স্বামী বিপ্রানন্দ জী ও শ্রী শ্রী গোপীনাথ ব্রহ্মচারীসহ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন ও মঠ-মন্দিরে হামলার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে ‘সনাতন জাগরণ মঞ্চ’। ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট মিলে ‘সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ আত্মপ্রকাশ করে।