সাধারণত আমরা লেবুর রস ব্যবহারের পর এর বাইরের হলুদ খোসাটি ফেলে দিই। তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, লেবুর খোসার এই আপাত বর্জ্য অংশটিই হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক ‘সুপারফুড’ এবং এতে লেবুর রসের চেয়েও বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, লেবুর খোসায় থাকা প্রাকৃতিক তেল, ভিটামিন, লিমোনিন ও শক্তিশালী ফ্ল্যাভোনয়েড জাতীয় উদ্ভিদ যৌগ শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লেবুর খোসার টক স্বাদ সামান্য হলেও এটি অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে। লেবুর খোসা যেভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখে:
১. শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুরক্ষা: লেবুর খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড ও ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষা দেয়। এই উপাদানগুলো ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি থাকার কারণে লেবুর খোসা শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। এটি কোলাজেন উৎপাদনেও সহায়তা করে, যা ত্বককে সুন্দর ও সুস্থ রাখে এবং যেকোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৩. হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস: লেবুর খোসায় হেস্পেরিডিন এবং ডায়োসমিন নামক দুটি যৌগ পাওয়া যায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং রক্তনালীর কার্যকারিতা উন্নত করে। এতে থাকা পটাশিয়ামও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমতে পারে।
৪. লিভার ডিটক্সিফিকেশনে সহায়তা: লেবুর খোসায় থাকা প্রাকৃতিক তেল ‘লিমোনিন’ লিভারের এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে তোলে। এই প্রক্রিয়ার ফলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ সহজে বের হয়ে যায়। এটি লিভারের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে হজমেও সাহায্য করে।
৫. ত্বকের স্বাস্থ্য ও উজ্জ্বলতা: ভিটামিন সি ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণে লেবুর খোসা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে, বলিরেখা হ্রাস করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি ও পরিবেশ দূষণের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এটি ভেতর থেকে উজ্জ্বল ও সুস্থ করে তোলে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, লেবুর খোসা ফেলে না দিয়ে তা খাদ্যতালিকায় যুক্ত করার মাধ্যমে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমানো এবং ত্বককে সুন্দর রাখা সম্ভব।
স্টাফ রিপোর্টার 



















