
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
শনিবার (৩১ মে) বিকেলে শহরের পৌরসভায় শহীদ টিটু মিলনায়তনে বগুড়া জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এ দাবি জানান তিনি।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায়। কিন্তু তারেক রহমান ২০২৩ সালে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন। তাই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। বিএনপিকে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ নেই। অতীতে বিএনপিকে নিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। কিন্তু জনগণের ভালোবাসায় বিএনপি এখনও দেশের সর্ববৃহৎ ও জনপ্রিয় দল।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে সরাসরি যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বাকশাল সরকারের পতনের পর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা সহ্য করতে না পেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাকে হত্যা করেও তার আদর্শ হত্যা করতে পারেনি।
ডা. জাহিদ বলেন, যত অন্যায়, অনাচারের দল আওয়ামী লীগ। এদেশে বাকশাল বানিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ৭৫-এ সিপাহী জনতা বিপ্লবের মধ্যে মেজর জিয়া এদেশকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। জন্মের পর থেকেই জিয়াউর রহমান নিজেকে তৈরি করেছেন দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য। তার কালজয়ী দর্শন সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও জাতীয়তাবাদী দল। এবং সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। দেশকে সাবলম্বী করার জন্য মানুষকে আশা জাগিয়েছেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ বিএনপিকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বা ষড়যন্ত্র করে থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা মহান আল্লাহ ছাড়া কারও নেই। যারা ষড়যন্ত্র করছেন, হুমকি দিচ্ছেন, মনে রাখবেন বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি পাকিস্তান, বাকশাল, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ এবং ২৭ মার্চ এদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন শহীদ জিয়া। তিনি এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছেন। যখন এদেশে মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ১৯৭১ সালে জেড ফোর্স গঠন করেছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান। কারণ তিনি জানতেন দেশকে স্বাধীন করতে হলে নিয়মিত বাহিনীকে লড়াই করতে হবে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১১ জন সেক্টর কমান্ডার চাইলে দেশ পরিচালনা করতে পারতেন। কিন্তু মেজর জিয়া ব্যারাকে ফিরে গিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধেও তার অবদান রয়েছে। মাত্র কয়েক বছরে এদেশের মানুষকে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। খাল কাটার মধ্যে সারাদেশ ঘুরেছেন। সাধারণ মানুষের গণজোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন। আজ যারা রেমিট্যান্স নিয়ে কথা বলেন তারা ভুলে গেছেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের হাত ধরে এদেশের মানুষ রেমিট্যান্স যোদ্ধা হওয়া শুরু করেছিল।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ২৪ আন্দোলনে শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধদের দলীয়করণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আসলে তারা কোনো দলের নয়, তারা এদেশের মানুষের জন্য জীবন দিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে ৪৭ বাদ দিয়ে ৭১ হবে না, ৭১ বাদ দিয়ে ৭৫ হবে না, ৭৫ বাদ দিয়ে ৯০ হবে না, ৯০ বাদ দিয়ে ২৪ হবে না। তাই সকল গুম খুনের বিচার করতে হবে। যারা নির্বিচারে গুলি করে আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করেছে তাদের বিচার করত হবে।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এ কে এম মাহাবুবর রহমান ও হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহা. হাছানাত আলী।
উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা কাজী রফিকুল ইসলাম, ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, জয়নাল আবেদীন চাঁন, সহিদ উন নবী সালাম, খায়রুল বাশার, জাহিদুল ইসলাম হেলাল প্রমুখ।